21-11-2024 08:57:27 am
Link: https://bigyan.org.in/prime-numbers
স্কুলজীবনে গণিতবিদ্যায় হাতে খড়ির একেবারে সাথেসাথেই মাস্টারমশাই এর বেত্রাঘাতের দাপটেই হোক বা স্বাভাবিক কৌতূহলবশেই হোক, পড়ুয়াদের মজ্জাগত হয়ে যায় সংখ্যা (numbers) দুই ধরনের: মৌলিক (prime) ও যৌগিক (composite)। কোনো সংখ্যাকে যদি কেবলমাত্র এক এবং সেই সংখ্যা দিয়েই ভাগ করা যায় (অর্থাৎ ভাগশেষ শূন্য আসে), তাকে বলা হয় মৌলিক সংখ্যা। এই মৌলিক সংখ্যার গণিতচর্চাই পরবর্তীকালে কম্পিউটার সায়েন্সের আনুকূল্যে ক্রিপ্টোগ্রাফি (cryptography / সংকেতলিপি)-র মতো বিষয়ে একটি মূল অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজ তাই এই মৌলিক সংখ্যার মধ্যে লুকিয়ে থাকা কিছু বিস্ময় তোমাদের সাথে ভাগ করে নিতে চাই।
স্কুলে থাকাকালীনই ছাত্র-ছাত্রীরা এই মৌলিক সংখ্যার কিছু আশ্চর্য গুণাগুণ নিজেরাই দেখতে পেয়ে যায়। প্রথমতঃ দুই ছাড়া আর কোনো জোড় সংখ্যা মৌলিক (even prime) হয় না, কারণ অন্য যে কোনো জোড় সংখ্যা দুই দ্বারা বিভাজ্য। দ্বিতীয়তঃ সমস্ত মৌলিক সংখ্যার ব্যাপ্তি বেশ অবিন্যস্ত। অর্থাৎ তারা বেশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। শুরুর দিকের মৌলিক সংখ্যাগুলির ওপর চোখ বোলালেই ব্যাপারটা পরিষ্কার হবে : ২, ৩, ৫, ৭, ১১, ১৩, ১৭, ১৯, ২৩, ২৯, ৩১, … । সুতরাং, যদি প্রশ্ন করা হয় : ২০১৭-তম মৌলিক সংখ্যাটি কী? মৌলিক সংখ্যার গণনার জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট ফর্মুলা না থাকায় কম্পিউটার বাবাজীর শরণাপন্ন হওয়া ছাড়া গতি নেই।
স্বাভাবিক ভাবেই মনের মধ্যে একটা প্রশ্ন উঁকি দেয় : মৌলিক সংখ্যাদের দেখে তো মনে হচ্ছে ব্যাপারটা বেশ বিরল। তোমরা নিজেরাই চেষ্টা করে দেখো ১ থেকে ১০০০ পর্যন্ত মৌলিক সংখ্যাগুলি লিখে ফেলতে। কী? জটিল লাগছে তো? তাহলে এরকম একটা অতীব বিরল ব্যাপারের কি আদৌ কোনো শেষ আছে ? অর্থাৎ এক কথায় বলতে গেলে : মৌলিক সংখ্যার সংখ্যা সসীম না অসীম ?
এই প্রশ্নটির খুব সরল অথচ গাণিতিকভাবে আকর্ষণীয় প্রমাণ দেন গ্রীক গণিতজ্ঞ ইউক্লিড। তিনি প্রমাণ করেন মৌলিক সংখ্যার সংখ্যা অসীম।
প্রমাণটা এইরকম: আমরা শুরুতে ধরে নিই যে মৌলিক সংখ্যার সংখ্যা সসীম। সেই সীমাটাকে চিহ্নিত করা যাক। ধরা যাক, n-খানা মৌলিক সংখ্যা হতে পারে। মৌলিক সংখ্যাগুলির নামকরণ করলাম p1 , p2 , … , pn হিসেবে। এই n-খানা সংখ্যার বাইরে আর কোনো মৌলিক সংখ্যা নেই।
কিন্তু, একটা মৌলিক সংখ্যা সহজেই বানানো যায় যেটা এর বাইরে। p1 , p2 , … , pn সংখ্যাগুলোকে গুন করে তার সাথে এক যোগ করে একটা নতুন সংখ্যা তৈরী করা যাক:
( p1 X p2 X … X pn ) + ১
এই সংখ্যাটি p1 , p2 , … , pn -এর মধ্যে কোনো একটা নয় কারণ সে এদের গুণফলের থেকেও বড়। আবার একে p1 , p2 , … , pn -এর মধ্যে যেকোনো একজনকে দিয়ে ভাগ করলেই ভাগশেষ (রিমেন্ডার) এক হবে। অতএব কোনো মৌলিক সংখ্যার দ্বারাই সে বিভাজ্য নয়। তাই সে নিজেই মৌলিক।
সুতরাং, আমাদের শুরুর অনুমানটা অসম্ভব এবং মৌলিক সংখ্যার সংখ্যা অসীম। এটা এক সেট মৌলিক সংখ্যা নিয়ে সহজেই দেখতে পারো। যদি ২ আর ৩-এ মিলে মৌলিক সংখ্যা শেষ হতো, তাহলে সেটা ডাহা ভুল হতো কারণ
(২ X ৩) + ১ = ৭
এটাও একটা মৌলিক সংখ্যা। যদি {২,৩,৫,৭} মিলে মৌলিক সংখ্যা শেষ হতো, সেটাও ভুল হতো কারণ
(২ X ৩ X ৫ X ৭ ) + ১ = ২১১
এটাও মৌলিক সংখ্যা। যেখানেই শেষ ধরে নিই না কেন, আরো বড় একটা মৌলিক সংখ্যা তৈরী করতে পারি।
এই ধরণের প্রমাণের পদ্ধতিকে বলে “মেথড অফ কন্ট্রাডিকশন”। পদ্ধতিটি কিছুটা এরকম: যে জিনিসটা প্রমাণ করতে চলেছি, তার বিপরীত বক্তব্যকে ধরে নেব সত্য বলে। তা থেকে এমন একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছবো যেটা শুরুর ধরে নেওয়া বক্তব্যটাকে নাকচ করে দেয়।
গণিতের জগতে যখনই এরকম কোনো বিশেষ ধরণের সংখ্যাগোষ্ঠীর সদস্যসংখ্যা অসীম হয়, তখন প্রশ্ন ওঠে তাদের অসীম সমষ্টি বা তাদের কোনো বিশেষ রূপের অসীম সমষ্টির মান নিয়ে।
ছোট্ট উদাহরণ দিলেই ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। ধরা যাক : ১, ২, ৪, ৮, ১৬, ৩২ , ….. এই ধরণের সংখ্যার কথা। অর্থাৎ ২n জাতীয় সংখ্যা যেখানে n হলো ১,২,৩,৪,..। যেহেতু এগুলি ধনাত্মক (পজিটিভ), এবং ক্রমবর্ধমান সংখ্যা, তাই এর অসীম সমষ্টিকে নিলে আমরা কোনো সসীম মান পাবো না। কিন্তু আমরা যদি এর অনোন্যক সংখ্যাগুলির (রেসিপ্রোকাল-এর) সমষ্টির কথা ভাবি:
১ + ১/২ + ১/৪ + ১/৮ + ১/১৬ + ১/৩২ + …
তাহলে দেখবো এই অসীম সমষ্টির মান কিন্তু সসীম:
১ + ১/২ + ১/৪ + ১/৮ + ১/১৬ + ১/৩২ + … = ২
প্রমাণ করা সোজা। যদি যোগফলটা S হয়, তাহলে:
S = ১ + + ১/২ + ১/৪ + ১/৮ + ১/১৬ + ১/৩২ + …
= ১ + ১/২ [১ + ১/২ + ১/৪ + ১/৮ + ১/১৬ + … ] = ১ + ১/২ S
সমীকরণটা সমাধান করলে দাঁড়ায় S = ২।
ওই একই প্রশ্ন স্বাভাবিক ভাবেই উঠে আসে মৌলিক সংখ্যার ক্ষেত্রেও। এদের অসীম সমষ্টি বা অনোন্যকের অসীম সমষ্টির মান সসীম না অসীম? প্রথম অসীম সমষ্টির ক্ষেত্রে উত্তরটা সোজা:
২ + ৩ + ৫+ ৭+ ১১ + ১৩ + ১৭ + ১৯ +২৩ + …
প্রত্যাশিত ভাবেই সমষ্টির মান অসীম কারণ অসীম সমষ্টিটি ধনাত্মক, ক্রমবর্ধমান সংখ্যার যোগফল।
এই বিষয়ে আরো লেখাঃ মৌলিক সংখ্যা দ্বারা বিভাজ্যতা
কিছুটা আশ্চর্য ফল পাওয়া যায় অনোন্যকের অসীম সমষ্টিটির ক্ষেত্রে। এই ক্ষেত্রে সংখ্যাগুলি ধনাত্মক এবং ক্রমহ্রাসমান। অর্থাৎ, সিরিজ-এ যত এগোচ্ছি, সংখ্যার মান কমতে থাকছে। তা সত্ত্বেও এই যোগফলটা কিন্তু অসীম:
১/২ + ১/৩ + ১/৫+ ১/৭+ ১/১১ + ১/১৩ + ১/১৭ + ১/১৯ +১/২৩ + …
আমাদের আগের উদাহরণের সাথে তুলনা করলে একটু চমকে ওঠা স্বাভাবিক।
মৌলিক সংখ্যাগুলির অনোন্যকদের যোগফল অসীম – এই গাণিতিক সত্যটি প্রথম প্রমাণ করেন সুইস গণিতজ্ঞ লিওনার্ড অয়লার (Leonhard Euler)। যদিও পাঠকবন্ধুদের সুবিধার্থে আমরা হাঙ্গেরিয়ান গণিতজ্ঞ পল এরদিশ (Paul Erdős)-এর আবিষ্কৃত প্রমাণে চোখ রাখবো। এই প্রমাণটিও “মেথড অফ কন্ট্রাডিকশন”-এর ওপর নির্ভরশীল।
এর আগে মেথড অফ কন্ট্রাডিকশন-টা এরকমভাবে দেখেছিলাম: যা প্রমাণ করতে চাই, তার বিপরীতটাকে সত্য বলে ধরে নিয়েছিলাম। সেখান থেকে ধরে নেওয়া সত্যটার একদম বিপরীত সত্যে উপনীত হয়েছিলাম। এবার যেভাবে প্রমাণ করবো, সেটাও মেথড অফ কন্ট্রাডিকশন। তবে আপাতভাবে একটু অন্যরকম।
এখানেও যা প্রমাণ করতে চাই, তার বিপরীত সত্যটা ধরে নেব। ধরে নেওয়ার ফলে দুটো সিদ্ধান্ত পাবো, যারা একে অপরের সরাসরি বিরোধী। যেহেতু শুরুর ধরে নেওয়াটা ছাড়া আর কোথাও প্রমাণে ফাঁক নেই, অতএব এই পরস্পর-বিরোধী দুটো সিদ্ধান্তই প্রমাণ করে যে ধরে নেওয়াটা ভুল ছিল।
যা প্রমাণ করতে চাই, তার বিপরীত-টা কল্পনা করা যাক। অর্থাৎ, এই অসীম সমষ্টির মান সসীম। এই মানটিকে “S” হিসেবে চিহ্নিত করা যাক:
১/২ + ১/৩ + ১/৫+ ১/৭+ ১/১১ + ১/১৩ + ১/১৭ + ১/১৯ +১/২৩ + … = S
এবার মৌলিক সংখ্যাগুলোকে দুভাগে ভাগ করা যাক:
ভাগটা কোথায় করছি, সেটা এই প্রমাণের জন্য জরুরি নয়। কিন্তু বোঝার সুবিধের জন্য ভাগটা এমনভাবে করলাম যাতে প্রথম ভাগের সমষ্টি (S – ১/২)-এর থেকে একটু বেশি আর দ্বিতীয় ভাগের সমষ্টি ১/২-এর থেকে ঠিক ততটাই কম (দু-ভাগের যোগফল যাতে S থাকে)। অসমীকরণগলো লিখলে দাঁড়ায় এরকম:
১/২ + ১/৩ + ১/৫ + ১/৭ +… + ১/pn > S – ১/২
১/pn+১ + ১/pn+২ + ১/pn+৩ +… < ১/২
খেয়াল রেখো, ১/২ ব্যাপারটা এখানে জরুরি নয়। এক ভাগের সমষ্টির মান S-এর থেকে সামান্য কম, ব্যস এইটুকুই প্রয়োজন। তবে, ১/২ ধরলে অঙ্কটা করতে সুবিধে হয়।
এবার একদল স্বাভাবিক সংখ্যা নিয়ে (অর্থাৎ ১,২,৩,৪,…, N), তাদের দুদলে ভাগ করা যাক:
প্রথম দলে যত সংখ্যা আছে, সেটাকে Ns হিসেবে চিহ্নিত করলাম আর দ্বিতীয় দলে যত সংখ্যা আছে, সেটাকে Nb। ‘s’ ছোট বা স্মল-এর প্রতীক আর ‘b’ বড়ো বা বিগ-এর।
যে পরস্পর-বিরোধী দুটো সত্য এবার বেরিয়ে আসবে, সেগুলোকে অঙ্কের ভাষায় লেখা খুব সোজা। প্রথমটা হলো:
Ns + Nb = N
দ্বিতীয়টা হলো:
Ns + Nb < N
অর্থাৎ, দুদলের সংখ্যার সমষ্টি যতগুলো স্বাভাবিক সংখ্যা নিয়েছিলাম, তার সমান এবং কম। দুটোই একসাথে সত্যি হতে পারেনা। তাই একদম শুরুতে যেটা ধরে নিয়েছিলাম, অর্থাৎ মৌলিক সংখ্যার অনোন্যকের সমষ্টি সসীম, সেটা নিশ্চয়ই ভুল।
একে একে দুটো সত্যিকে এবার সাব্যস্ত করা যাক। প্রথমটা সোজা। দুটো দল এমনভাবে গঠন করেছিলাম যে ১,২,৩,৪,…,N-এর মধ্যে যে কোনো একটা স্বাভাবিক সংখ্যা নিলে, সে হয় প্রথম দলে থাকবে, নতুবা দ্বিতীয় দলে। অতএব দুই দলের সদস্যসংখ্যার সমষ্টি N হতে বাধ্য:
Ns + Nb = N
দ্বিতীয় সত্যটাকে প্রমাণ করতে একটু কাঠখড় পোড়াতে হবে। এক এক করে ছোট-র দল আর বড়ো-র দলকে দেখা যাক। বড়ো-র দল দিয়ে শুরু করি।
বড় মৌলিক সংখ্যাগুলোকে তৈরী করা হয়েছিল এই অসমীকরণটার সাহায্যে:
১/pn+১ + ১/pn+২ + ১/pn+৩ +… < ১/২
অসমীকরণটার দুদিকেই N দিয়ে গুন করলে আসে:
N/pn+১ + N/pn+২ + N/pn+৩ +… < N/২
এবার বড়ো মৌলিক সংখ্যা ছেড়ে বড়ো স্বাভাবিক সংখ্যা-র দলটাকে দেখা যাক। এই দলে তারাই আছে যাদের অন্তত একটা গুণনীয়ক (ফ্যাক্টর) একটা বড়ো মৌলিক সংখ্যা। এবার আমরা গুনবো, এই বড়ো-র দলে কতগুলো সদস্য আছে।
N-এর থেকে ছোট এবং যার একটা গুণনীয়ক pn+১, সেই সংখ্যাগুলোকে লেখা যাক:
pn+১, ২pn+১ , ৩pn+১, ৪pn+১,…
এরকম করে গুনতে থাকলে N-এ গিয়ে থামবো (যদি N হয় pn+১ -এর একটা গুণিতক বা মাল্টিপল), বা তার একটু আগে থামবো। অর্থাৎ এরকম সংখ্যা পাবো N/pn+১ গুলো বা তার কম [টীকা ১] । একই কথা pn+২ , pn+৩,…, ইত্যাদি-র ক্ষেত্রেও বলা চলে।
তাহলে, বড়ো-র দলে যতগুলো সদস্য আছে, সেটা N/pn+১ + N/pn+২ + N/pn+৩ +…-এর সমান হতে পারে বা তার কম। এই সদস্যসংখ্যাকেই নাম দিয়েছিলাম Nb। অতএব:
Nb ≦ N/pn+১ + N/pn+২ + N/pn+৩ +… < N/২
দ্বিতীয় অসমীকরণটা এই সেকশন-এ একটু আগেই দেখলাম।
সুতরাং, বড়োর দলের সংখ্যা অর্থাৎ Nb সংখ্যাটি N/২-এর থেকে কম। এবার ছোট-র দলে যাওয়া যাক। এটুকু প্রমাণ করলেই হবে যে সেই দলের সদস্যসংখ্যা অর্থাৎ Ns সংখ্যাটি N/২ এর সমান বা কম। তাহলেই, এইটা প্রমাণ হয়ে যাবে:
Ns + Nb < N
ছোট-র দলে সেইসব সংখ্যা ছিল যাদের সবকটা গুণনীয়কই (ফ্যাক্টর) ছোট মৌলিক সংখ্যা। অর্থাৎ এদেরকে ভাঙলে যে কোনো ছোট মৌলিক সংখ্যা শূন্য, এক বা একাধিকবার আসবে। অর্থাৎ, ছোট-র দলে যে কোনো একটা সংখ্যা m-কে লেখা যায় এইভাবে:
m = am X bm২
am-এর মধ্যে যে কোনো ছোট মৌলিক সংখ্যা শূন্যবার বা একবার এসেছে। bm২ -এর মধ্যে ছোট মৌলিক সংখ্যা জোড়সংখ্যক-বার এসেছে। ধরো, ৫৪ সংখ্যাটি। এটাকে লেখা যায়:
৫৪ = ২ X ৩ X ৩ X ৩
এক্ষেত্রে am হলো ২ X ৩ আর bm২ হলো ৩ X ৩। এরকমভাবে ভাগ করতে হলে আগে সংখ্যাটির পুরো গুনকনির্ণয় করো। তারপর যেসব মৌলিক সংখ্যাগুলো বিজোড়সংখ্যকবার এসেছে, তাদের থেকে একটা করে নিয়ে am-এ ঢোকাও। বাকি যা পড়ে রইলো, সেগুলো bm২ -এ ঢোকাও।
এবার am আর bm-কে আলাদা করে দেখি।
bm N
এবার উপরের দুটো তথ্যকে মেলানো যাক। যেহেতু যেকোনো ছোট-র দলের সদস্যকে am X bm২ হিসেবে লেখা যায়, তাই ছোট-র দলের সদস্যসংখ্যা Ns এই অসমীকরণটি মেনে চলে:
Ns ২n N
এতক্ষন N-এর উপর কোনো বিধিনিষেধ ছিল না। যা খুশি হতে পারতো। এবার N যদি ২২n+২ হয়, তাহলে এরকম দাঁড়াবে:
Ns ২n N = ২২n+১ = N/২
আর N যদি ২২n+২-এর থেকে বেশি হয়, তাহলে এরকম দাঁড়াবে:
Ns ২n N < N/২
অর্থাৎ, অন্তত কিছু N-এর ক্ষেত্রে ছোট-র দলের সংখ্যা N/২-এর সমান বা কম। আগের সেকশন-এ দেখেছিলাম, বড়ো-র দলের সংখ্যা N/২-এর কম। দুইয়ে মিলে দাঁড়ালো:
Ns + Nb < N
যেটা Ns + Nb = N-এর সরাসরি বিরোধ করে। অতএব একদম শুরুতে যে ধরে নিয়েছিলাম:
১/২ + ১/৩ + ১/৫+ ১/৭+ ১/১১ + ১/১৩ + ১/১৭ + ১/১৯ +১/২৩ + … = S
যেখানে S একটা সসীম সংখ্যা, সেটা ঠিক নয়। অর্থাৎ, মৌলিক সংখ্যার অনোন্যকের সমষ্টি অসীম। কি, বোঝা গেলো?
(Cover Photo: Raphael, Euclid and His Students.)
যারা বিষয়টি নিয়ে আরও গভীরে জানতে ইচ্ছুক তাদেরকে কয়েকটি বইয়ের কথা অবশ্যই বলতে হয় :
টীকা ১: আসলে সংখ্যাটা হলো ফ্লোর ফাঙ্কশন N/pn+১। ফ্লোর ফাঙ্কশন সম্পর্কে আরো জানতে এখানে দেখো: https://en.wikipedia.org/wiki/Floor_and_ceiling_functions
লেখাটি অনলাইন পড়তে হলে নিচের কোডটি স্ক্যান করো।
Scan the above code to read the post online.
Link: https://bigyan.org.in/prime-numbers