21-11-2024 10:27:05 am
Link: https://bigyan.org.in/gravitational-wave-detection-ligo_1
আইজ্যাক নিউটন বসে ছিলেন আপেল গাছের তলায়। হঠাৎ এক আপেল এসে পড়ল তাঁর মাথায়। ব্যাস, ‘দিমাগ কি বাত্তি’ জ্বলে উঠল নিউটনের! ভেবে ফেললেন মহাকর্ষ (gravitation)-এর কথা। এটা একটা জনপ্রিয় গল্প। সত্যি কি না – তা বিচার করবেন বিজ্ঞানের ইতিহাস নিয়ে যারা গবেষণা করেন তাঁরা। কিন্তু, যে কথায় কোনো ভুল নেই তা হল – কোনো বস্তুর ভর থাকলে, আরেকটা ভরযুক্ত বস্তুকে সে মহাকর্ষের জন্য কাছে টানে। তাই, সূর্যের চারিদিকে পৃথিবী ঘোরে, ঋতু পরিবর্তন হয়। বরফগোলা জলের ধারা নদী হয়ে নেমে আসে পাহাড়-পর্বত থেকে। আবার মহাকাশে যেতে হলে রকেটে চাপতে হয়।
স্কুলের পাঠ্য বইয়ে মহাকর্ষের পাঠ শুরু হয় নিউটনের সূত্র দিয়ে। সূত্রটি হল:
এই সূত্র দিয়ে M ও m বিন্দুভরের দুটি বস্তুর মধ্যে মহাকর্ষ বল F অঙ্ক কষে আমরা সহজেই বের করতে পারি। ভর ছাড়াও জানতে হয় তাদের মধ্যেকার দূরত্ব (r)। এখানে G হল মহাকর্ষীয় ধ্রুবক। মহাকর্ষ বল দুটি ভরকে পরস্পরের দিকে টানে। নিউটনীয় তত্ত্ব পৃথিবীর বেশীরভাগ ঘটনা ব্যাখ্যা করতেই যথেষ্ঠ। তবে এটা হল, যাকে বলে আসন্নায়ন (approximation) [১]। যা একদম নিখুঁত সত্যি নয়, কিন্তু আমাদের চেনাপরিচিত পরিবেশে, যেমন পৃথিবীর বুকে, তার বাইরে কিম্বা ভূগর্ভেও খাটে।
তবুও, মহাকর্ষের এই নিউটনীয় ধারণা কিছু কিছু ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে পারে না। আলোর ভর নেই, তাই নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র অনুযায়ী আলোর উপর মহাকর্ষ বল থাকা উচিত নয়। কিন্তু, জ্যোতির্বিদ্যার পরীক্ষায় দেখা যায় যে মহাকাশে খুব ভারী বস্তুর পাশ দিয়ে আসার সময় আলোর গতিপথ বেঁকে গেছে! আরেকটি উদাহরণ হল বুধ গ্রহের অনুসূর গতি (perihelion of mercury)। দেখা যায় যে সূর্যের চারপাশে প্রদক্ষিণ করার সময় বুধ গ্রহের কক্ষপথের অনুসূর বিন্দু (অর্থাৎ কক্ষপথের যে বিন্দুটি সূর্যের সবথেকে কাছে) ধীরে ধীরে সরতে থাকে। নিউটনের মহাকর্ষ তত্ত্ব অনুসূর গতির পরীক্ষালব্ধ ফল কে ব্যাখ্যা করতে পারে না। এমনিতে, খুব ভারী এবং ঘন বস্তুর খুব কাছে চলে গেলে সেক্ষেত্রে নিউটনের মহাকর্ষ বলের ধারণা আর প্রযোজ্য হয় না।
তখন আমাদের আইনস্টাইনের সাধারণ অপেক্ষবাদের (general relativity) শরণাপন্ন হতে হয়। এখনও পর্যন্ত যতগুলো পরীক্ষা হয়েছে, তা সে হাল্কা বা ভারী যে কোনো বস্তুর মহাকর্ষই হোক না কেন , সবেতেই সাধারণ অপেক্ষবাদ সসম্মানে উত্তীর্ণ। এই সাধারণ অপেক্ষবাদ নিউটনের মাধ্যাকর্ষণ সূত্রের বদলে শুধু একটা নতুন সূত্র দেয় তাই নয়, এই তত্ত্ব মহাকর্ষকে নতুন দিক থেকে ভাবতে শেখায়। এই তত্ত্ব স্থান-কালের জ্যামিতিকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসে।
এখন নিশ্চয়ই প্রশ্ন জাগছে মনে যে ‘স্থান-কালের জ্যামিতি’ কথার মানে কি? আইনস্টাইন বুঝেছিলেন যে কোন বস্তু কোথায় আছে সেটা ঠিক ভাবে বর্ণনা করতে হলে শুধু সে স্থান অর্থাৎ space-এর ঠিক কোথায় আছে বললেই চলবে না, একই সাথে সময়টাও বলতে হবে। অর্থাৎ স্থানিক তিন মাত্রার (three spatial directions) সাথে সময় বা কাল মিলে চার-মাত্রার স্থান-কাল তৈরি করে। আর শুধু স্থানের জ্যামিতি – যেমন একটা পিঁপড়ে গোলকের উপর হেঁটে বেড়াচ্ছে – তা নিয়ে আলোচনা করার বদলে আলোচনা করতে হবে এই চার-মাত্রার স্থান-কালের গাণিতিক রূপ বা জ্যামিতিক রূপ নিয়ে।
স্থান আর সময় বা কাল-কে আলাদা করে ভাবা যায় না। তার কারণ হল, কোন বস্তুর গতির উপর নির্ভর করে তার সময় কিভাবে বইছে। উদাহরণ হিসাবে দুটো ঘড়ির কথা বলা যাক – লাল ঘড়ি আর নীল ঘড়ি। ঘড়িদুটো এমন যে প্রতি সেকেণ্ডে একটা করে আলোর স্পন্দন (pulse) ছাড়ে। দুটোই প্রথমে টেবিলের উপর ছিল আর একদম একই সময় দিত। অর্থাৎ লাল ঘড়ির এক সেকেণ্ড আর নীল ঘড়ির এক সেকেণ্ড একদম সমান। এবার নীল ঘড়িকে একটা রকেটে চাপিয়ে দেওয়া হল। সে প্রবল গতিতে আমার থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। কিন্তু তার থেকে যে আলোর স্পন্দন বেরোচ্ছে তা আমার চোখে (বা যন্ত্রে) ধরা পড়ছে।
যেহেতু লাল ঘড়িটি আমার কাছেই রয়েছে, অবশ্যই আমি এক সেকেণ্ড অন্তর একটা আলোর স্পন্দন দেখব। নীল ঘড়ির ক্ষেত্রে ব্যাপারটা কিন্তু একটু আলাদা। রকেট আর নীল ঘড়িটি প্রবল গতিবেগে আমার থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। তাই, সেকেণ্ডে একটা আলোর স্পন্দন ছাড়ার মাঝে সে নিজে অনেকটাই আমার থেকে দূরে সরে গেছে। এক্ষেত্রে স্পন্দনটা কিছুটা অতিরিক্ত দূরত্ব অতিক্রম করে (ঠিক আগের স্পন্দনটার তুলনায়) তবেই আমার আমার কাছে এসে পৌঁছবে। তাহলে আমি কি দেখব? পৃথিবীতে বসে আমি দেখব যে নীল ঘড়িটি এক সেকেণ্ডের একটু বেশি সময় অন্তর স্পন্দন ছাড়ছে। অর্থাৎ, সেটা ‘স্লো’ হয়ে গেছে। একটু ভাবলেই স্পষ্ট হবে যে, এটা কিন্তু খুবই গভীর এবং মৌলিক (Fundamental) ব্যাপার। এর মানে কিন্তু এই নয় যে চলমান ঘড়ি ‘খারাপ’ হয়ে গেছে, তাই স্লো চলছে।
এখন যদি এমন কোন সংকেত বা সিগন্যাল থাকত যার গতিবেগ অসীম, তাহলে এই সমস্যা হত না। ঘড়ি দুটোকে এমন ভাবে তৈরি করতাম যে ‘এক সেকেণ্ড’ অন্তর অন্তর সে আলোর বদলে ওই সংকেত ছাড়তো। যেহেতু তার গতিবেগ অসীম, তাই সেই সংকেত ঘড়ি থেকে আমাদের চোখে (বা কোন যন্ত্রে) এসে পৌঁছতে কোন সময় নিত না। আর তাই নীল ঘড়ি মাটিতেই থাক আর রকেটেই থাক, তার এক সেকেণ্ডের কোন তফাৎ হত না।
এখানেই মুশকিল! বাস্তবে শূন্যস্থানে আলোর গতিবেগের থেকে বেশি গতিবেগে কোন সংকেত চলে না। নিউটন এই সত্যটা বুঝতে পারেননি। আর তাই, তাঁর দেওয়া গতিসূত্রে ব্যবহৃত সময় হল absolute, সব ঘড়ির এক সেকেণ্ড সমান। ১৯০৫ সালে বিশেষ অপেক্ষবাদে (special relativity) আইনস্টাইন সেই যুক্তিকে খণ্ডন করলেন।
এখানে মাথায় রাখতে হবে, এর ফলে নিউটনের গতিসূত্র কিন্তু একেবারে বাতিল হয়ে গেল না। ছাদ থেকে ঝোলানো একটা পেণ্ডুলাম কিভাবে দুলছেসেটা বুঝতে বা ব্রিজ তৈরি করতে যে মেকানিক্সের জ্ঞান লাগে, তা নিউটনের মাধ্যাকর্ষণ সূত্র দিয়েই চলে যায়, কারণ এই পেণ্ডুলামের গতিবেগ আলোর গতিবেগের তুলনায় নগন্য। আইনস্টাইন দেখালেন কোন বস্তু যখন খুব জোরে (যা আলোর গতির তুলনায় নগন্য নয়) ছুটতে থাকে, তখন নিউটনের গতিসূত্র একেবারেই খাটে না।
এবার মহাকর্ষ সূত্রের কথায় ফিরে আসা যাক। নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র, যা উপরে বাক্সের মধ্যে লেখা আছে, তার দিকে একবার ভাল করে তাকানো যাক। এই সূত্রে সময়ের উল্লেখই নেই! ধরা যাক, M আর m ভরের বস্তুদুটোর মধ্যে অনেক দূরত্ব, এতটাই যে তাদের একটার থেকে আরেকটায় যেতে আলোর সময় লাগে এক মিনিট। M ভরের বস্তুটি আমার কাছে আছে, আমি হঠাৎ করে তাকে একটু সরিয়ে দিলাম। তাহলে দূরত্ব r পালটে গেল কিছুটা। এখন প্রশ্ন হল, কতক্ষণ পর m ভরের বস্তুটি জানতে পারবে যে অন্য বস্তুটা সরে গিয়েছে আগের জায়গা থেকে?
নিউটনের সূত্র (বাক্সের মধ্যে দেওয়া সমীকরণ) অনুযায়ী আমার M ভরের বস্তুটাকে সরানোর খবর m ভরের বস্তু সঙ্গে সঙ্গে পেয়ে যাবে। কারণ, মহাকর্ষ বল F পালটে গেছে ততক্ষণে। তাহলে, আমি M ভরের বস্তুটাকে ঠিকভাবে নাড়িয়ে চাড়িয়ে আমার যে বন্ধু m ভরের বস্তুর কাছে বসে আছে, তাকে যদি কোনো সংকেত পাঠাই, সে সংকেত অসীম গতিবেগে তার কাছে পৌঁছে যাবে তৎক্ষনাৎ!
আবার সেই সমস্যা! মহাবিশ্বে অসীম গতিবেগে কোন সংকেত যায় না। তাই, নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র অসম্পূর্ণ।
প্রশ্নটা তাহলে থেকে যাচ্ছে, মহাকর্ষ পরিবর্তনের খবর এক বস্তু থেকে আরেক বস্তুতে কিভাবে পৌঁছোয়?
সমস্যার সমাধান করলেন আইনস্টাইন। তিনি মহাকর্ষকে একটা বল (ফোর্স) হিসাবে না ভেবে স্থান-কালের জ্যামিতির পরিবর্তন হিসাবে ভাবলেন।
সাধারণ অপেক্ষবাদে (general relativity) আইনস্টাইন বললেন, ভারী বস্তুর উপস্থিতিতে স্থান-কাল কুঁচকে যায় (বিজ্ঞানীদের ভাষায় একে বলে, স্থান-কালের বক্রতা বা spacetime curvature)। এই স্থান-কাল কুঁচকে যাওয়া ব্যাপারটার ধারণা করা বেশ শক্ত। স্থান কুঁচকে যাওয়া আমরা তাও কল্পনা করতে পারি, কিন্তু সময় কুঁচকে যাওয়া মানে কি তা কল্পনা করা মুশকিল। অঙ্কের সাহায্য ছাড়া তাই সাধারণ অপেক্ষবাদ ঠিকভাবে ব্যাখ্যা করা প্রায় অসম্ভব। যদিও, নিচে একটি বহুল প্রচলিত উপমা দেওয়া হল। পাঠক খেয়াল রাখবেন, এটা কিন্তু শুধুই একটা উপমা।
উপমাটা এরকম – ধরুন, একটা ত্রিপল টান-টান করে টাঙানো হলো চারটে খুঁটির মধ্যে। একটা লোহার বল সযত্নে তার মধ্যিখানে রেখে দেওয়া হলো। অমনি ত্রিপলটা মাঝখানে ঝুলে পড়বে। এবার ওই ত্রিপলে একটা পিংপং বল ছেড়ে দিলে, যেখানেই ছাড়ি না কেন, পিংপং গড়িয়ে লোহার বলের দিকে আসবে। এবার একটা পিঁপড়ের কথা ভাবুন, যে ওই ত্রিপলটায় উপর গুটিগুটি এগোচ্ছে। সে আশেপাশে যেটুকু দেখতে পাচ্ছে, তাতে তার মনে হচ্ছে, সে সমতল ভূমিতে হাঁটছে। সে ভাবছে — ‘ওমা, লোহার বলটা টেনে নিলো পিংপং বলটাকে।’ সে তো আর বুঝতে পারছে না, ত্রিপলটা মাঝখানে ঝুলে পড়েছে। সে দেখলো, “সমতল” ভূমিতে একটা বল আরেকটার কাছে “আকৃষ্ট” হলো।
এখানে পাঠক ভাবতেই পারেন যে ত্রিপলটা ঝুলে পড়ল কারণ পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের জন্য লোহার বলের ওজন আছে। শূন্যস্থানে (মানে যেখানে মাধ্যাকর্ষণ নেই, সেখানে) ত্রিপলটা ঝুলবে না তার উপর ভারী একটা লোহার বল ছেড়ে দিলেও। একদম ঠিক। সেজন্যই আমরা পাঠকদের মনে করিয়ে দিচ্ছি আবার যে এই ছবিটা কেবল একটা উপমা। এইটুকু বলার জন্য যে ভারী বস্তুর জন্য স্থান-কালের জ্যামিতির পরিবর্তন হয়।
এই উপমায় আমরা অনেকটা পিঁপড়েটার মত। আর এই ত্রিপলটা চারমাত্রার স্থান-কাল। চতুর্মাত্রিক স্থানকালের বক্রতা আমরা দেখতে পাই না, কারণ আমরা তার মধ্যেই বসে আছি। শুধু দেখি দুটো ভরযুক্ত বস্তু একে অপরকে আকর্ষণ করছে, আর আমরা তাকেই বলি মহাকর্ষ। যত ভারী বস্তু, স্থানকালের পর্দায় তত গভীর খাদ সৃষ্টি করে সে। যত বেশি তার ঘনত্ব, সেই খাদের ঢাল হয় ততটাই বেশি।
আইনস্টাইনের মহাকর্ষ সূত্রে এই স্থান-কালের বক্রতা চলে আসে। কোন বস্তুর ভর জানা থাকলে সে স্থান-কালে কতটা বক্রতা তৈরি করে, তার হিসেব কষা যায়। আমাদের আশেপাশের সাধারণ বস্তু, এমনকি সূর্যও এতটাই কম স্থান-কালের বক্রতা তৈরি করে যে নিউটনের মাধ্যাকর্ষণ সূত্র খুব ভাল ভাবেই খেটে যায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। তাই এই ক্ষেত্রে স্থান আর কাল বা সময়কে আলাদা করে ভাবলে ক্ষতি হয় না (যদি না বস্তুটি আলোর গতিবেগের কাছের বেগ নিয়ে ছোটে, সেক্ষেত্রে বিশেষ অপেক্ষবাদ নিয়ে ভাবতে হয়, আর সেক্ষেত্রে স্থান-কালকে একসাথে ভাবতে হয়)।
কিন্তু, মৃতপ্রায় নক্ষত্রদের ক্ষেত্রে এই স্থানকালের বক্রতা খুব স্পষ্টভাবে চেনা যায়। মৃতপ্রায় নক্ষত্র জ্বালানীর অভাবে সংকুচিত হতে থাকে [২]। তাই তার ঘনত্বও বাড়তে থাকে। কিছু নক্ষত্র শেষকালে কৃষ্ণগহ্বরে (black hole) পরিণত হয়। সাইজ ছোট হওয়ার ফলে দুটো কৃষ্ণগহ্বর মহাকর্ষের টানে একে অপরকে না ছুঁয়েও খুব কাছে চলে আসতে পারে। এরকম হলে আর সোজাসুজি ধাক্কা না খেলে, কৃষ্ণগহ্বর দুটো খুব ছোট কক্ষপথে একে অপরের চারিদিকে ঘুরপাক খেতে থাকে। পেল্লায় ভর, ক্ষুদ্র কক্ষপথের ব্যাস — অঙ্কটা কষলে দেখা যায় যে তাদের গতি প্রায় আলোর গতিবেগের কাছাকাছি চলে যেতে পারে।
অর্থাৎ, মৃতপ্রায় নক্ষত্রদের উপস্থিতিতে স্থান-কালের পর্দায় একটা বিশাল গহ্বরের সৃষ্টি হয়। আর দুটো গহ্বর এরকম ভয়ানক গতিতে ঘুরপাক খেলে, প্রতি মূহুর্তে স্থান-কালের পর্দার রূপ পালটাতে থাকে। পুকুরে ব্যাং লাফালাফি করলে যেমন ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে, তেমনি এই ব্ল্যাকহোলের নাচানাচিতে স্থান-কালের পর্দায় তরঙ্গ তৈরি হয়। একেই বলে মহাকর্ষ তরঙ্গ।
আইনস্টাইনের অপেক্ষবাদ এই মহাকর্ষ তরঙ্গের ভবিষ্যদ্বাণী করলেও এতদিন তা সরাসরি দেখা যায়নি। উপরের উদাহরণে স্থান-কালের ঢেউ উৎস থেকে বহুদূর পেরিয়ে যখন আমাদের কাছে এসে পৌঁছোয়, তার বিস্তার (অ্যাম্প্লিচুড) খুবই কমে গেছে। তাই একে সনাক্ত করা দুরূহ ব্যাপার। এই আপাত দুঃসাধ্য কাজই করেছে বিজ্ঞানীরা। LIGO নামক যন্ত্রের সাহায্যে। সেই কাহিনী বলব পরের সপ্তায়।
(প্রচ্ছদের ছবি LIGO ল্যাবরেটরীর, উৎস)
উৎসাহী পাঠকদের জন্য:
[১] আরেকটা আসন্নায়নের উদাহরণ দেখতে এই লেখাটি পড়ুন।
[২] নিউট্রন তারকা বা কৃষ্ণগহ্বর সম্বন্ধে জানতে নক্ষত্রদের শেষ অবস্থা নিয়ে এই আলোচনাটি দেখুন।
লেখাটি অনলাইন পড়তে হলে নিচের কোডটি স্ক্যান করো।
Scan the above code to read the post online.
Link: https://bigyan.org.in/gravitational-wave-detection-ligo_1