21-11-2024 08:54:02 am
Link: https://bigyan.org.in/computational-geometry-computer-science-career
সৌমিক ঘোষ (বিজ্ঞান): জ্যামিতি কথাটা শুনলে হাইস্কুলের গণিতের কথা মনে পড়ে। তার সাথে তাত্ত্বিক কম্পিউটার গণনার কী সম্পর্ক?
সুজয় ভোর: সেটা বোঝাতে গেলে একটু ইতিহাসের দিকে দেখতে হবে। কম্পিউটারের গণনার পিছনে যে তত্ত্ব রয়েছে (theory of computation), দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গণিতজ্ঞ টিউরিং প্রথম সেই তত্ত্বটাকে দাঁড় করান। তারপর, অর্থাৎ 1950 এবং 1960 এর দশকে, এই তত্ত্বের ব্যাপক হারে অগ্রগতি হতে থাকে।
সেসময় বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছিলেন কীকরে গণনার অ্যালগরিদম-গুলোকে (algorithm) আরো দ্রুত, আরো চটপটে (efficient) এবং আরো নির্ভরযোগ্য (robust) করে তোলা যায়। সেটা করতে গিয়ে একটা নতুন চিন্তাধারা শুরু হলো। অ্যালগরিদম-এর ইনপুট হিসেবে যেসব তথ্যাবলী (data) ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলো নিয়ে কোনো ধারণা আছে কিনা এবং সেই ধারণাটাকে কাজে লাগানো যায় কিনা, সেই নিয়ে বিজ্ঞানীরা ভাবতে লাগলেন। বলা যায়, গণনার প্রণালী থেকে বেরিয়ে সেই গণনাতে যে রসদ ঢুকছে, সেই দিকে তাদের নজর পড়লো।
উদাহরণ স্বরূপ ধরো, আমি একটা শহর থেকে অন্য শহরে স্বল্পতম দূরত্ব অতিক্রম করে যাওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু যে রেলপথের নেটওয়ার্ক রয়েছে, তার মধ্যে দিয়েই আমাকে যেতে হবে। এখন প্রশ্ন হলো, সেই রেলপথের নেটওয়ার্ক নিয়ে কি আমার কোনো ধারণা রয়েছে? সেটা যদি না থাকে, তাহলে শুধু কী করতে হবে, সেটুকু জেনে আমি খুব efficient কোনো সমাধানে আমি আসতে পারবো না। সেই সমাধানের খোঁজে আমি কিছুদূর অব্দিই যেতে পারবো।
যখনই বিজ্ঞানীরা গণনা প্রণালীর বাইরে বেরিয়ে সেই গণনায় কী ঢুকছে সেদিকে নজর দিলেন, একটা মজার ব্যাপার ঘটলো। চারপাশের জগতের দিকে তাদের চোখ পড়লো। আমাদের চারপাশের জগৎটা কিন্তু নানা রকম জ্যামিতিক আকৃতির বস্তু দিয়ে ভর্তি। গণনার সুবিধের জন্য সেইসব আকৃতি নিয়ে যা বিশ্লেষণ হয়েছে, সেগুলো প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়লো।
যেমন ওই স্বল্পতম দূরত্বের সমস্যাটাই ধরো। এই দূরত্বটা আমি খোঁজার চেষ্টা করছি একটা জ্যামিতিক স্থানের (space) মধ্যে। একটু অঙ্কের ভাষায় বললে, একটা ইউক্লিডিয় স্থানের (Euclidean space) মধ্যে এই খোঁজটা করছি। এই ধরনের স্থানের কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যেগুলো আমরা কাজে লাগাতে পারি।
কমিপিউটেশন নিয়ে কাজ করার সময় বিজ্ঞানীরা আরো লক্ষ্য করেন যে, অন্যান্য ফলিত বিষয়ের সাথে এর একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে। যেমন একটা উদাহরণ হলো রোবোটিক্স।
রোবটিক্স বর্তমানে বহুলপ্রচলিত এবং কম্পিউটার সায়েন্সের অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ একটা উপশাখা। একটা রোবটকে যদি আমরা বাড়ি থেকে ওষুধের দোকানে পাঠাতে চাই, মাঝে রাস্তায় পার্ক, গাড়ি, কুকুর এবং আরো অনেক কিছু সেখানে থাকতে পারে। সেগুলো রোবটের জন্য এক একটা বাধা। ধাক্কা লাগলে রোবটের ক্ষতি হতে পারে।
মানুষের মস্তিষ্ক এই সবগুলোকে বুঝেই চলাফেরা করে। কিন্তু একটি প্রাণহীন বস্তু যার নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই, সে কিভাবে এইগুলো সম্পর্কে সচেতন হতে পারে? এর জন্য রোবটকে তার আশেপাশের জ্যামিতিক স্থান সম্পর্কে সচেতন করতে হবে।
তাহলে বুঝতেই পারছ, কম্পিউটার সায়েন্স-এর সাথে জ্যামিতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
তোমার একটা মজার কৃতিত্ব আছে দেখলাম। তোমার এরডস সংখ্যা (Erdos number) 2। এই সংখ্যাটা নিয়ে একটু বলো। গণিতজ্ঞরা এই সংখ্যাটাকে নিয়ে কেন মাতামাতি করেন? আর তোমার 2 হলো কীকরে?
পল এরডস গত শতাব্দীর প্রথম সারির গণিতজ্ঞদের মধ্যে একজন। খুব আশ্চর্য প্রতিভাবান মানুষ ছিলেন তিনি। ওনার জ্ঞান আহরণের প্রায় কোনো সীমা ছিল না বললে চলে।
ওনার কাজ করার ধরণটাও ছিল একটু অদ্ভুত। সারা বিশ্ব জুড়ে ওনার সহকর্মী এবং পরিচিত গণিতজ্ঞ ছিল, উনি তাদের মধ্যে ঘুরে ঘুরে কাজ করতেন।
গণিতের জগতে ওনাকে নিয়ে একটা বিখ্যাত কথা প্রচলিত আছে। আমরা যেমন কারোর সাথে দেখা হলে প্রথমে বলি, “আপনি কেমন আছেন?”, এরডস কারো সাথে দেখা করলে প্রথমে বলতেন, “আপনার জন্য আমার কাছে একটা অঙ্কের সমস্যা আছে।” ওনার দেওয়া সমস্যাগুলো মোটামুটি কাউকে হতাশ করেনি। মানে, এমন কোনো সমস্যার কথা উনি বলেননি যেটাতে অপরজনের কোনো উৎসাহ থাকবে না। এটা ওনার একটা অসাধারণ ক্ষমতা। কোন্ বৈজ্ঞানিক কোন প্রশ্নে উৎসাহিত হবেন বা কে সেই প্রশ্নে সবথেকে বেশি অবদান রাখতে পারবেন, সেটা বুঝতে পারার অনন্য ক্ষমতা ছিল তার। ওনার বুদ্ধিমত্তা, ওনার অবদান, এসব যদি পাশে সরিয়েও রাখি, শুধুমাত্র ওনার এই ক্ষমতাটাই ওনাকে আলাদা করে দেয়।
টিমোথি গোয়ার্স-এর একটি বইতে তিনি সুন্দর ভাবে দেখিয়েছেন যে গণিতের দুটো শাখা রয়েছে। একটি হলো গণিতের তত্ত্ব বিকাশ করা (theory building), আরেকটি শাখা হল বিশেষ বিশেষ সমস্যার সমাধান করা (problem solving)। যে গণিতজ্ঞরা সমস্যা সমাধানের দিকে রয়েছেন, তাদের শীর্ষস্থানীয়দের মধ্যে প্রথম যার নাম মনে আসে তিনি পল এরডস। তিনি বহু সংখ্যক গবেষণাপত্র লিখেছেন, পৃথিবীর বহু স্থানের বহু মানুষের সাথে লিখেছেন। আধুনিক গণিত বা কম্পিউটার সায়েন্সে যে নীতিগুলো মেনে কাজ করা হয়— অর্থাৎ সারা বিশ্বের বহু বৈজ্ঞানিকদের মাঝে যে বিশাল সহযোগিতা আর সমন্বয়ের জালটা আমরা দেখতে পাই — সেটা এরডস-এর থেকে অনুপ্রেরিত।
তার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি হিসেবে এরডস সংখ্যার সৃষ্টি। যারা এরডস-এর সাথে সরাসরি কাজ করেছেন তাদের এরডস সংখ্যা ধরা হয় 1। এবং যারা এরডস এর সাথে সরাসরি কাজ করেননি, কিন্তু এরডস সংখ্যা 1 এমন ব্যক্তিদের সাথে কাজ করেছেন, তাদের এরডস সংখ্যা 2। এই ভাবেই সংখ্যাটিকে গণনা করা হয়। এভাবে একটি জালের (network) সৃষ্টি হয় যার কেন্দ্রে রয়েছেন গণিতজ্ঞ এরডস স্বয়ং।
এই জালটা এতটা বেশি প্রাসঙ্গিক কারণ বহু ফিল্ড মেডেল প্রাপ্ত, নোবেল বিজয়ী, বা বহুলাংশে সফল ব্যক্তির এরডস সংখ্যা খুব কম। অর্থাৎ তারা এরডস-এর সাথে বা তার খুব কাছের মানুষর সাথে কাজ করেছেন বা করছেন।
ঘটনাচক্রে অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত ভাবে আমার এরডস সংখ্যা 2। ইসরায়েলে PhD করার সময় এক চেক গণিতজ্ঞের সাথে আমার কাজ করার সুযোগ হয়। কাজটা ছিল এরডস-এরই একটা অমীমাংসিত প্রশ্ন Erdos-Szekeres problem-এর ওপর।
তোমার গবেষণা নিয়ে অনেক আলোচনা হলো, আমরা তোমার এত দূর পর্যন্ত যাত্রা সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক। PhD এবং পোস্ট ডক্টরেট কোথায়? তারপর ভারতে ফিরে আসার পেছনে কী চিন্তা কাজ করছিল?
আমি PhD করেছি ইসরায়েল-এর বেন-গুরিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তাছাড়াও ইউএসএ-র স্টোনি ব্রুক বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার একটা বড় সময় কেটেছে কারণ আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে স্টুডেন্ট এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম-এর জন্য ওখানে গিয়েছিলাম। এর পরে ভিয়েনা-তে আমি এক বছর পোস্ট ডক্টরেট করি। এবং এটার পরে আরো এক বছর বেলজিয়াম-এর ব্রাসেলসে কাজ করি। 2021-এর এপ্রিলে আমি ভারতে ফিরে এসে প্রথমে IISERএর সাথে যুক্ত হই এবং পরবর্তী সময়ে আইআইটি বোম্বেতে।
ভারতে ফিরে আসা নিয়ে আমি কখনও খুব গভীরভাবে ভাবিনি। ছোটবেলায় আমি কোনোদিন এটাও ভাবিনি যে আমি তাত্ত্বিক বিষয় নিয়ে গবেষণা করব। একটা সাধারণ কৌতূহল ছোটবেলা থেকেই ছিল। ইচ্ছে ছিল নতুন এবং সৃষ্টিশীল কিছু করার।
পরবর্তীকালে যখন এই বিষয়গুলি নিয়ে আমার কৌতূহল তৈরি হওয়া শুরু হয়, আমি লক্ষ্য করি এবং সেটা পরে বিশ্বাসে পরিণত হয় যে মানুষের যেকোনো সৃষ্টিশীল কাজ করার জন্য পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সাথে একটা ছন্দ এবং মিল থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি মনে করি একজন মানুষের সেখানেই থাকা উচিত যেখানে সে তার সৃজনশীলতাকে সর্বাধিক সদ্ব্যবহার করতে পারবে। বিদেশে থাকাকালীন আমার কখনও এটা মনে হয়নি যে আমি দেশের পরিবেশে এই কাজ করতে পারব না। যেহেতু এটা কোনোদিন খুব বড় পার্থক্য তৈরি করেনি, স্বাভাবিকভাবেই আমি ফিরতে চাইতাম।
যদিও বিদেশে থাকার সুবিধে রয়েছে, যেমন বিভিন্ন সেমিনারে মানুষের সাথে পরিচয় হওয়া, বা PhD ও পোস্টডক্টরেট-এর সময় যারা পাশে ছিল তাদের খুব কাছের বন্ধু হয়ে যাওয়া। এই ব্যাপারগুলো গবেষণার জগতে একটা পরিচিতি তৈরি করতে সাহায্য করে। কিছু কিছু সময় অবশ্যই আমার ওদের কথা মনে পড়ে। কোনো কনফারেন্সে গেলে বা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলে আবার তাদের সাথে দেখাও হয়ে যায়। আমি অবশ্যই জীবনের ওই সময়টাকে উপভোগ করেছিলাম। কিন্তু আমার কখনই মনে হয়নি এমন কোনো কাজ আছে যেটা আমি ভারতে থেকে করতে পারব না, যেটার জন্য আমাকে বাইরে থাকতেই হবে।
আরেকটা বিষয় হলো আমার পরিবার। যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে আমার মনে হয়। বিদেশে থাকলে পরিবারের সাথে বছরে একবার দেখা হওয়া বা তাদের সাথে দূরত্বে থাকা, এই ব্যাপারগুলো আমার কাছে মানসিকভাবে খুব কষ্টকর। সেটার মধ্যে দিয়ে যেতে আমি হয়তো রাজি ছিলাম না। আমি মনে করি গবেষণা খুব গুরুত্বপূর্ণ হলেও জীবনের সর্বস্ব নয়। ছবি আঁকা বা সিনেমা দেখতে যাওয়া, সব ধরণের শখগুলি নিয়ে আমি থাকতে চাই। আমি তাই মনে করি দেশে থেকে আমি এই দিকগুলো নিয়েও চর্চা করার অনেক সুযোগ বেশি পাই।
তোমার PhD বা পোস্টডক্টোরেট-এর জন্য বিদেশে থাকা এবং ভারতে ফিরে এসে আগে IISER এবং পরবর্তী কালে আইআইটি বোম্বেতে যুক্ত হওয়া — নিশ্চয় আগের শিক্ষার্থী হিসেবে জীবন আর বর্তমান কর্মজীবনের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে? তোমার এখনকার জীবনের একটা দিন সাধারণত কিভাবে কাটে? খাতা পেন নিয়ে নাকি কোডিং করতে নাকি মিটিং-এর মাঝে?
আমার মত যারা তত্ত্ব নিতে গবেষণা করেন তাদের কাজের সরঞ্জাম অনেক কম লাগে। সহকর্মী এবং বন্ধুরা মজা করে বলে যে আমাদের কাজ খাতা পেনে সীমাবদ্ধ।
তবে যন্ত্রপাতি প্রযুক্তি সব নয়। স্টিভ জবস একটা সুন্দর কথা বলেছিলেন, “আমি আমার সমস্ত প্রযুক্তি দিয়ে দিতে পারি যদি একটা সন্ধ্যা সক্রেটিস-এর সাথে কাটাতে পারি।” এই বাক্যটার গুরুত্ব আমি অনুভব করতে পারি তত্ত্ব নিয়ে গবেষণার সময়। মানুষ রূপী সম্পদ, বা মানুষে মানুষে কথপোকথন, শুধু এটাই যে কতটা গুরুত্বপুর্ণ সেটা আমরা অনেকসময় উপলব্ধি করতে পারি না।
আমি আমার শিক্ষার ধাপগুলোর মধ্যে দিয়ে যাওয়ার পর বুঝেছি যে আমরা যে বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করি সেই বিষয়ের দর্শন বা দৃষ্টিকোণের প্রভাব আমাদের জীবনের অন্য দিকেও এসে পড়ে। যেমন, তুমি যদি অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা কর, তাহলে সেটা তোমার চিন্তা ভাবনা জীবনদর্শনের ওপর প্রভাব ফেলবে।
আমার গবেষণা যেহেতু তাত্ত্বিক, সেইভাবে ভাবনাচিন্তা করাটা আমার জীবনের সমস্তদিকে এসে পড়েছে। এই ভেবে মাথা থেকে বার করার যাত্রাটা আমার কাছে অনেক বেশি সন্তোষজনক লাগে। কোনো একটা প্রশ্ন দেখলে, বা ঘটনা চাক্ষুষ করলে তার মূল বিষয়টা খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা বা সেই ঘটনার মৌলিক উপাদান সম্বন্ধে জানার ইচ্ছাটা, এগুলো এই তাত্ত্বিক গবেষণার শিক্ষা থেকেই এসেছে।
এটা তুমি পড়াশোনার বাইরের জিনিস সম্পর্কে বলছ? তাই তো?
হ্যাঁ। যদিও আমি মনে করি এই দুটি বিষয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। গবেষণার মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন কিছু খোঁজার চেষ্টা করি। এখন এরকম তো হয়না যে কোনো মানুষ শুধু তার কাজের সময় তার চিন্তাভাবনাগুলো করবে এবং কৌতূহলী হবে, আর জীবনের বাকি সব ক্ষেত্রে সেটা বন্ধ করে দেবে। এটা তো সম্ভব নয়।
তোমার প্রশ্নটাতে ফিরে আসি। আগে এবং এখনকার মধ্যে সবথেকে বড় যে পার্থক্যটা আমি লক্ষ্য করি, সেটা হলো, দায়িত্ববোধের পার্থক্য। যখন আমি ছাত্র ছিলাম, PhD হোক বা পোস্টডক্টোরেট, তখন নিজের গতিতে ইচ্ছামত কাজ করার স্বাধীনতা ছিল। সেই সময়ে যদি আমি কিছু কাজ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ না করতে পারতাম, আমার কখনও মনে হয়নি আমি কাউকে নিরাশ করছি।
কিন্তু এখন ছাত্রদের সাথে কাজ করার সময় আমার মনে হয় আমাকে অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এরা তরুণ, জিজ্ঞাসু, এবং নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করছে। চেষ্টা করছে কাজগুলোকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করার। হয়তো তাদের ক্যারিয়ারের পরবর্তী ধাপের জন্য সেটা দরকার। এরকম অবস্থায় আমি যদি বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে না দেখি তাহলে পরিস্থিতিটা খারাপ হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
সেই কারণে প্রশাসনিক কাজের চাপে সহকর্মীদের সাথে মাঝেমধ্যে আলোচনা করতে না পারলেও কখনও ছাত্রদের সাথে দেখা করার সুযোগ এড়িয়ে যাই না। মনে হয় আমার জন্য কোনো প্রতিভাশালী ছাত্র যেন অনুপ্রেরণা হারিয়ে না ফেলে।
(এই লেখাটি মূল ইন্টারভিউ থেকে লিপিবদ্ধ করেছেন সৌমেন্দু জানা। প্রচ্ছদ ও অন্যান্য ছবি এঁকেছেন শ্রেয়া সুধীর।)
লেখাটি অনলাইন পড়তে হলে নিচের কোডটি স্ক্যান করো।
Scan the above code to read the post online.
Link: https://bigyan.org.in/computational-geometry-computer-science-career