09-05-2025 00:39:58 am

print

 
বিজ্ঞান - Bigyan-logo

বিজ্ঞান - Bigyan

বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণের এক বৈদ্যুতিন মাধ্যম
An online Bengali Popular Science magazine

https://bigyan.org.in

 

ডিরাক মেডেলে সম্মানিত বিজ্ঞানী অশোক সেন


%e0%a6%aa%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%b2%e0%a6%ac-%e0%a6%ac%e0%a6%b8%e0%a7%81
পল্লব বসু

(ICTS, Bangaluru)

 
14 Aug 2014
 

Link: https://bigyan.org.in/ashoke-sen-dirac-medal

%e0%a6%a1%e0%a6%bf%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%95-%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%a1%e0%a7%87%e0%a6%b2%e0%a7%87-%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%a4-%e0%a6%ac%e0%a6%bf

এলাহাবাদনিবাসী বিশিষ্ট বিজ্ঞানী অশোক সেনের নাম আপনারা হয়ত শুনে থাকবেন। সাম্প্রতিক তিনি সম্মানিত হয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ডিরাক মেডেলে। আগে পেয়েছিলেন Fundamental prize (২০১২) এবং ICTP prize (১৯৮৯)। এছাড়াও ডঃ সেন বহু দেশী, বিদেশী পুরষ্কারে ভুষিত হয়েছেন। ভারত সরকার তাঁকে দিয়েছেন পদ্মভূষণ।

ডঃ সেন একজন তাত্ত্বিক পদার্থবিদ, তাঁর গবেষণার বিষয় হল string theory (তন্তুতত্ত্ব) এবং black hole (কৃষ্ণগহ্বর)। কি দিয়ে সমস্ত কিছু গড়া ‌‌– মহাবিশ্বের গুঢ় থেকে গুঢ়তম রহস্যভেদের নিরলস সাধনে মগ্ন এই বিজ্ঞানী। গর্বের কথা হল, বহু বিদ্যমান বিজ্ঞানী ভারতে কাজ করেই আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করেছেন। কিন্তু সেনের ব্যাপারটা ভিন্ন, তিনি শুধুমাত্র খ্যাতি লাভ করেন নি — তিনি বারংবার গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে গিয়েছেন, সন্ধান দিয়েছেন নতুননতুন দিশার, হয়েছেন তামাম বিশ্বের বিজ্ঞানী সমাজের পথপ্রদর্শক। ঐইকারণে, ডঃ সেন বিশ্বশ্রেষ্ট হাতেগোনা কয়েক জন তন্তুতাত্ত্বিকের মধ্যে বিবেচিত হন।

কেবলমাত্র একটা তত্ত্ব দিয়ে কি মহাবিশ্বের খুদ্র থেকে বৃহৎ সর্বরূপ ঘটনার ব্যাখ্যা সম্ভব? কি সেই মহাতত্ত্ব? — তন্ততত্ত্ব এব্যাপারে এক প্রধান দাবীদার। অণুর ভিতর থাকে পরমাণু। পরমাণুর ভিতরে আছে বিভিন্ন মৌলিক কণা : ইলেকট্রন, প্রোটন , নিউট্রন আর মেসন। তন্তুতত্ত্ব-র বক্তব্য হল এইসব মৌলিক কণা ছোটছোট তন্তু দিয়ে তৈরী: রাবারব্যান্ডের মত। সেতারের তারের বিভিন্ন কম্পন থেকে যেমন বিভিন্ন সুর হয়, তেমন তন্তুর কম্পন থেকে পাওয়া যায় বিভিন্ন মৌলকণা।

মজার ব্যাপার হল, তন্তুর ঐই কম্পন থেকে পাওয়া যায় গ্র্যাভিটন। যা মহাকর্ষেরবাহক। তন্তুতত্ত্ব ছাড়া অন্যান্য তত্ত্ব থেকে চট করে মহাকর্ষ বোঝা যায় না। মহাকর্ষ থাকলেই থাকবে রহস্যময় কৃষ্ণগহ্বর ‌‌– স্থান কালের মধ্যে একটি গহ্বর যার থেকে আলো অব্দি বেরোতে পারেনা। ডঃ সেন তন্তুতত্ত্বে কৃষ্ণগহ্বরের রহস্যভেদের এক অন্যতম পথকৃৎ। তবে তন্তুতত্ত্ব একপ্রকার নয়, বিভিন্ন ধরণের তন্তুতত্ত্ব হয়। কিন্ত পরে বোঝা গেছে, ঐসব বিভিন্ন তত্ত্ব আসলে একটাই মহাতত্ত্বের বিভিন্ন রূপ। সেন ঐ ব্যাপারেও এক গুরুত্ত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এছাড়াও তন্তুতত্ত্বের (এবং বিশিষত তন্তুখেত্রতত্ত্বের) অন্যান্য বিষয়ে ডঃ সেনের বহু উল্লেখযোগ্য অবদান আছে।

Ashoke Sen at TIFR

(ছবি: হরিশচন্দ্র গবেষণা কেন্দ্রের পূর্বে বিজ্ঞানী অশোক সেন মুম্বই-এর টাটা ইন্সটিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ বা TIFR-এ অধ্যাপনা করেছেন ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত। সেই সময়কার একটি ছবি। সৌজন্যে: অধ্যাপক Sunil Mukhi এবং সুদীপ্ত মুখার্জী)

ডঃ সেনের জন্ম ১৯৫৬ সালে, কলকাতায়। তিনি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৫ সালে স্নাতক এবং আইআইটি কানপুর থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। তারপর স্টোনি ব্রুক বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে ডক্টরেট লাভ করেন। আগে ছিলেন ‌‌TIFR মুম্বাইতে। বর্তমানে তিনি HRI, এলাহাবাদে কর্মরত। তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে সবই খাতাকলমে কাজ, সেনও তাই করেন। সদাহাস্যময়, সদাবিনয়ী, আড়ম্বরহীন ঐই মানুষটিকে দেখে বোঝার যো নেই যে তিনি কত বড়মাপের বিজ্ঞানী। গবেষনার বাইরে উপভোগ করেন ভ্রমণ। ভালবাসেন ইউরোপের শহরগুলি হেটে পরিভ্রমণ করতে। ডঃ সেন ভোজনরসিক, আর লোকমুখে শুনেছি নিজেও অতীব রন্ধনপটু। বেশী পছন্দের মাছমাংস। কন্ফারেন্সে ডিনারে বলতে শুনেছি আমিষ আর সালাড ছাড়া আর কিছুই নেন নি।

(প্রচ্ছদে অশোক সেনের ছবিটি চারকোল মিডিয়ামে এঁকেছে সূর্যকান্ত শাসমল)

১। অশোক সেনের হোমপেজ- https://www.hri.res.in/~sen/
২। ডিরাক মেডেল সম্বন্ধে জানুন- https://www.ictp.it/about-ictp/prizes-awards/the-dirac-medal.aspx 
৩। ২০১৪ সালের ডিরাক মেডেলের ঘোষণা – https://www.ictp.it/about-ictp/media-centre/news/2014/8/dirac_2014.aspx

 

লেখাটি অনলাইন পড়তে হলে নিচের কোডটি স্ক্যান করো।

Scan the above code to read the post online.

Link: https://bigyan.org.in/ashoke-sen-dirac-medal

print

 

© and ® by বিজ্ঞান - Bigyan, 2013-25