কিন্তু কিছুক্ষণ পরে পরেই যেন জোর করেই গতিবেগ বাড়িয়ে দিচ্ছিল। অনুসন্ধান করে দেখলাম প্রায় দেড়শ’ হাত দূরে একটা ছোট্ট চাঁপা গাছ থেকে শুকনো ঘাস-পাতা, কাঁকর -পাথর অতিক্রম করে কল্পিত সুখের আশায় বরাবর সম্মুখের দিকে অগ্রসর হবার সময় এরা দৈবক্রমে এই টবের গাছটার কাছে উপস্থিত হয়েছিল। কারণ চাঁপা গাছটার পাতা সম্পূর্ণরূপে নিঃশেষিত হয়ে গেছিল এবং আশেপাশে তাদের খাবার উপযুক্ত কোনো গাছও ছিল না। কিন্তু আশেপাশে না চেয়ে এদের অগ্রগতির এই দৃঢ় সংস্কারই এদের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তারপর এই শোঁয়াপোকা নিয়ে পরীক্ষা শুরু করি – এরূপ একটা ঘটনা কী দৈবাৎ ঘটলো, না এদের স্বভাবই এরূপ ? টবের কানায় কানায় জল ভর্তি করে এই জাতীয় একদল শোঁয়াপোকাসহ একটি জবাগাছ পুঁতে দিলাম। পাতা খেয়ে নিঃশেষ করবার পর এরাও একদিন নতুন খাদ্যপুর্ণ স্থানের উদ্দেশ্যে অভিযান শুরু করলো। গাছটার গা বেয়ে নিচে নেমেই দেখে জল, কিন্তু তাতেও ভ্রুক্ষেপ নেই – একটা শোঁয়াপোকা জলের উপর নেমে শরীর টাকে নানাভাবে ঘুরিয়ে – ফিরিয়ে একটু অগ্রসর হবার সঙ্গে সঙ্গেই তার পিছনেরটাও জলে নেমে পড়লো, এইরূপে একটার পর একটা ক’রে ক্রমে ক্রমে সবগুলিই জলে নেমে ইতস্তত ভেসে ভেসে কিছুক্ষণের মধ্যেই অপর পাড়ে উঠে টবের কানার চতুর্দিকে চক্রাকারে ঘুরতে শুরু করে দিল। যাবৎ মৃত্যু এসে তাদের না থামাবে তাবৎ অহোরাত্র এই চক্রাকার পরিভ্রমন চলতেই থাকবে। আরও আশ্চর্যের বিষয়, এরা যখন এক ইঞ্চি থেকে প্রায় দেড় ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়, তখনই নতুন স্থানের সন্ধানে এদের এইরূপ অভিযান চালাতে দেখা যায়। পূর্ণ বয়সে এরা তিন ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয় এবং গায়ের রং কালো হয়ে যায়।
_______________
প্রবাসী, কার্তিক, ১৩৪৪
আপনাকে ইমেইল শুধুমাত্র Bigyan.Org.In এর খবরাখবর পাঠানোর জন্য ব্যবহৃত হবে। আপনার তথ্য আমাদের কাছে সুরক্ষিত।