প্রশ্নটা করব কোথায়? কিম্বা করব কাকে? সেটাই বোধহয় আমাদের জীবনের সবথেকে বড় প্রশ্ন।
The Uncertainty Principle, Contai Science Academy (CSA) এবং বিজ্ঞান (bigyan.org.in) এর যৌথ প্রয়াসের উদ্দেশ্যই হল তোমাদের প্রশ্ন করার একটা পাকাপাকি জায়গা দেওয়া, সঙ্গে প্রতি মাসে সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা আজকের বিজ্ঞান গবেষণার আলোকে, বিজ্ঞানীদের হাত ধরে।
প্রতি সেমিনারে একটি করে নতুন বিষয়ে হবে আলোচনা। বিষয় নির্বাচন? তোমাদের হাতে। তোমরা যেমন চাইবে, ঠিক তেমনটিই করার চেষ্টা করা হবে।
বক্তা – অধ্যাপক সৌমেন মান্না, সাহা ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্স
তারিখঃ ২২ অক্টোবর, ২০২১ সময়ঃ বিকেল ৬.৩০-এ (সাড়ে ছ’টা)
আমাদের প্রশ্ন করে শেখার অভিযানে স্থানকালের রহস্য সন্ধানের পর এবার আমরা উঁকি মারব ব্যাকটেরিয়ার দুনিয়ায়! আমাদের এবারের অভিযানের পাইলট বিজ্ঞানী সৌমেন কান্তি মান্না।
রেকর্ডিং – ওরে সহবাসী ব্যাকটেরিয়া – ডঃ সৌমেন মান্না
চলো একটু জেনে নেওয়া যাক ব্যাপারটা ঠিক কি!!
যে কয়েকটি বিষয় আমাদের অনুসন্ধিৎসু মনকে বার বার আন্দোলিত করে, তার একটি হল মানব শরীরের ক্রিয়াকলাপ ও বিবর্তন। বিজ্ঞানের অন্যান্য মৌলিক বিষয়গুলির তুলনায় এটি একটু আলাদা কারণ, এর থেকে আমাদের আলাদা হবার জো নেই। বিবর্তন প্রক্রিয়ায় জিনের একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা আছে — এ আমরা পড়েছি। হিউম্যান জিনোম প্রজেক্ট শুরু হয়েছিল এই আশা নিয়ে যে একবার মানুষের জিনগত গঠন বিশ্লেষণ করার পদ্ধতি আবিষ্কার করে ফেললেই আমরা কোন ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক দক্ষতা বা স্বাস্থ্য কেমন হবে, তা বলে দিতে পারবো। এমনকি কোন চিকিৎসা করলে কার কেমন ফল হবে, তাও বলে দিতে পারবো। কিন্তু সে আশা পূর্ণ হয়নি। উদাহরণস্বরূপ, চারপাশে যে রোগগুলি ক্রমশ বেড়ে চলেছে (ডায়াবেটিস, ওবেসিটি, হৃদরোগ, স্নায়ুক্ষয়, ক্যান্সার) তাদের গতিপ্রকৃতির তারতম্য শুধু জিনগত পার্থক্য দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না। অর্থাৎ, জিন ছাড়াও আরো কিছু রয়েছে যা আমাদেরকে প্রভাবিত করে। যেটা প্রথমেই মনে আসে, তা হল পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ও পরিস্থিতি। কিন্তু, গোল বাধলো যমজদের নিয়ে। একই জাইগোট থেকে সৃষ্ট এবং একই পরিবেশে লালিত-পালিত হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে তারা শারীরিক ভাবেও স্পষ্টতই ভিন্ন হতে পারে, তা খতিয়ে দেখতে গিয়ে তাদের নজর পড়ল আমাদের অন্ত্রে (gut) বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়াদের ওপর। জানা গেল যে, ব্যাকটেরিয়াদের বিপাক এবং আমাদের বিপাকক্রিয়া অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। আমাদের শরীরে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা আমাদের কোষের সংখ্যার প্রায় দশ গুণ। বিগত ১০-১৫ বছরে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে, কেবল খাদ্য পরিপাকে নয়, আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থেকে শুরু করে মানসিক স্বাস্থ্য অব্দি সকল শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় ব্যাকটেরিয়াদের প্রভাব আছে। ডায়াবেটিস, ওবেসিটি, ক্যান্সার, স্নায়ুক্ষয় থেকে মানসিক অবসাদ সমস্ত রোগের ক্ষেত্রেই আমাদের অন্ত্রে বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়ার অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। স্টেম কোষ ট্রান্সপ্ল্যান্টের মতোই সুস্থ মানুষের অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া ট্রান্সপ্ল্যান্ট করে এমন Autoimmune রোগগুলি সারানো সম্ভব হচ্ছে, যার অন্য কোন স্থায়ী নিরাময় নেই। ক্রমশ এটা স্পষ্ট হচ্ছে এই ব্যাকটেরিয়াগুলি আমাদের বিবর্তনের সহযাত্রী। প্রাকৃতিক ভাবেই আমাদের অন্ত্রে একইসাথে এরাও লালিত হতো। এদের জৈব-রাসায়নিক বৈচিত্র আমাদের সহায় হতো। প্রকৃতির থেকে দূরে সরে যাওয়া, খাদ্যাভ্যাসের প্রভূত পরিবর্তন এবং অ্যান্টিবায়োটিক-এর মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার ক্রমশ আমাদের শরীরের জৈববৈচিত্র্য ধ্বংস করে অযাচিত শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতার বিপদ ডেকে আনছে। আমাদের বুঝতে হবে আমাদের অন্ত্রের সুস্থতা এবং সহবাসী ব্যাকটেরিয়াদের সুস্থতা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।আগামীদিনের আলোচনায় আমরা বোঝার চেষ্টা করবো এই অব্দি আমাদের অন্ত্রে বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়ার প্রভাব সম্পর্কে আমরা কী জানতে পেরেছি বা পারিনি, কীভাবে পেরেছি বা পারি, জেনে কী হবে বা হতে পারে, এবং কীভাবে সেই সংক্রান্ত গবেষণায় যোগ দেওয়া যায় ইত্যাদি।
কতগুলি প্রয়োজনীয় লিংক:
(১) https://youtu.be/47csmddyZMM
(২) https://youtu.be/XCaTQzjX2rQ
(৩) https://youtu.be/-LUuqxQSaFQ
(৪) https://youtu.be/s3MZjgtvEQ8
(৫) জীবাণুদের যত কথা (bigyan.org.in)
(৬) ব্যাকটেরিয়া বনাম অ্যান্টিবায়োটিক্স: এ লড়াইয়ের শেষ কোথায়? (bigyan.org.in)
(7) ব্যাকটেরিয়ার উপর bigyan.org.in-এ প্রকাশিত লেখার তালিকা
বক্তা – বিশিষ্ট পদার্থবিজ্ঞানী অধ্যাপক সৌমিত্র সেনগুপ্ত, Indian Association for the Cultivation of Science
সময় – ২০ আগস্ট, ২০২১ বিকেল ৬.৩০টায় (IST) [পর্ব ১]
৩১ আগস্ট বিকেল ৬.৩০ এ (IST) [পর্ব ২ – প্রশ্নোত্তর]
রেকর্ডিং – পর্ব ১
পর্ব ২
প্রফেসর সৌমিত্র সেনগুপ্ত এর আগেও বিজ্ঞান-এর সাথে আড্ডায় বসেছিলেন। সেই আড্ডাটি এখানে দেখো:
স্থানকাল ব্যাপারটা নিয়ে একটু ধারণা করতে চাইলে এই লেখাটা দেখতে পারো:
মহাকর্ষীয় তরঙ্গের দেখা মিললো (প্রথম পর্ব) – স্থানকালে দোলা