মঙ্গলগ্রহে এককালে জল ছিল, সে চিহ্ন তো কবেই পাওয়া গেছে, তবে সে জলের ধারা না জমাট বরফ সে নিয়ে তর্ক চলছিল। সে তর্কে এক দিকে পাল্লা ভারী হলো এই সপ্তাহে প্রকাশিত একটা গবেষণাপত্রের ফলে। মঙ্গলগ্রহের বায়ুমন্ডল কোনো কালেই এত পুরু ছিল না যে গ্রহটির তাপমাত্রা জলের হিমাঙ্কের থেকে উপরে রাখতে পারে, দেখালেন প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী এডউইন কাইট। পৃথিবীর বায়ুমন্ডল যেটা করে আসছে যুগ যুগ ধরে সেটা মঙ্গলগ্রহের বায়ুমন্ডল ধারাবাহিকভাবে কখনই করে আসতে পারেনি।
কি থেকে এই সিদ্ধান্তে পৌছনো হলো ? সেই কাহিনীও বেশ অভিনব। মঙ্গলগ্রহের উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গহ্বরগুলি কতটা গভীর আর কিভাবে বিন্যস্ত, সেই পরিসংখ্যান থেকে এই দাবি। দুইয়ের মধ্যে যোগটা কথায় ? কাইট কম্পিউটার সিমুলেশনের সাহায্যে বললেন, মঙ্গলগ্রহের বায়ুমন্ডল যথেষ্ট সমর্থ হলে ওই পরিসংখ্যান সম্ভব ছিল না। বাইরে থেকে আসা যে কোনো বস্তু ওই বায়ুমন্ডলের ভিতর দিয়ে আসতে আসতেই ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে যেত। ওই সংখ্যায় অত বড় বড় গহ্বর তৈরী করতে পারত না। যেমন পারে না পৃথিবীতে।
এর আগেও কিছু প্রমাণ পাওয়া গেছে যে মঙ্গলগ্রহ মূলত বরফের রাজ্য ছিল। এই নতুন গবেষণা সেই দিকেই ইশারা করছে। কাইট বলছেন, জলের ধারা যদি থেকেও থাকে, তা সাময়িকভাবেই থাকতে পারে। যুগের পর যুগ ধরে নয়। তাই, মঙ্গলগ্রহে প্রাণের চিহ্ন খুঁজে পাওয়ার আশায় হয়ত জলাঞ্জলি দেওয়া যায়।
পৃথিবীর বায়ুমন্ডল এক আশ্চর্য শক্তিশালী রক্ষাকবচ। বাইরের গ্রহাণু ইত্যাদির আক্রমন থেকে আগলে রাখে, আবার সুর্যের তেজকে ধরে রাখে বিকিরণের সাহায্যে। এই দুটো কাজের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করে মঙ্গলগ্রহের ইতিহাস বলে দেওয়া গেল, এতেই তাক লেগে যায়।
ছবি: দা টেলিগ্রাফ