একটা প্রজাতির বহাল তবিয়তে থাকা থেকে সম্পূর্ণ বিলুপ্তিতে পৌঁছতে কতটা সময় লাগে? যদি স্থলচর শ্লথগতি প্রাণী হয়, তাদের আবাসস্থলে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ এলে সেটা খুব অল্প সময়ে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। কিন্তু যদি পরিযায়ী পাখি হয়?
এই প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে হলুদ-বুক বান্টিং (yellow- breasted bunting) পাখি। 2004-এও যে পাখিকে least concern গোত্রে ফেলা হতো, অর্থাৎ যার বিলুপ্তির আশঙ্কা ন্যূনতম ছিল, 2013-তে সেই পাখিই হয়ে গেছে endangered species বা বিপন্ন প্রজাতি, 2017-তে critically endangered বা অতিশয় বিপন্ন। দুঃখের কথা হলো, এই প্রজাতির বিনাশ হয়েছে মানুষের রসনার তৃপ্তি মেটাতে গিয়ে।
যে পাখির প্রজাতিকে একসময় সহজেই দেখা যেতো, সেটা দশ বছরের মধ্যে কীভাবে বিপন্ন হয়ে গেল, বুঝতে হলে আগে পাখিটার পরিযান-পথটাকে একটু দেখতে হবে। লক্ষণীয় বিষয় হলো, সেই পরিযান-পথটা অনেকগুলো দেশের গণ্ডি অতিক্রম করে, এবং তার মধ্যে কয়েকটিতে তাদের মানুষের শিকার হতে হয়।
হলুদ-বুক বান্টিং পাখি
হলুদ বুক বান্টিং-এর বৈজ্ঞানিক নাম Emberiza aureola। এটি কিন্তু বাংলার পাখি নয় ,তাই বাংলায় এর কোনো প্রচলিত নাম নেই (যদিও সাহিত্যিক বনফুল নাম দিয়েছেন ‘সোনা পাখি’)। এরা দণ্ডচারী বর্গের চিরিটিক বংশের ( Order = Passeriformes, Family = Emberizidae) অন্তর্ভুক্ত।
হলুদ বুক বান্টিং সাইজে চড়াইয়ের মত, দৈর্ঘ্য 14 থেকে 16 সেন্টিমিটার (5.5 – 6.3 ইঞ্চি)। পুরুষ পাখির উপরের অংশ বাদামি,পাশের দিকের রঙ কালো ও রেখাযুক্ত, নীচের অংশ উজ্জ্বল হলুদ, চাঁদি এবং গলায় আড়াআড়ি ভাবে একটি গোলাপি রঙের দাগ রয়েছে।
স্ত্রী পাখির পিঠ ঘন রেখাযুক্ত ধূসর–বাদামি, নীচের অংশ হালকা হলুদ, গালে ডোরাসহ একটি সাদা দাগ রয়েছে।
এরা খোলা ঝোপযুক্ত অঞ্চলে প্রজনন করে, ধানের খেতে মাটিতে বাসা করে, চার থেকে ছয়টি ডিম পাড়ে। খাদ্য বলতে সাধারণত পোকামাকড় খায় ও বাচ্চাদেরও তা খাওয়ায়, তাছাড়া বীজও খায়।
পরিযান পথ
ইউরোপের ফিনল্যান্ড থেকে জাপান পর্যন্ত হলুদ বুক বান্টিংয়ের একটি বিস্তৃত পরিসর রয়েছে। একসময় ইউরেশিয়ার সবচেয়ে জনবহুল পাখির প্রজাতিগুলোর মধ্যে এটি ছিল একটি।
শীতকালে পাখিটি দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উষ্ণ এলাকায় পরিযান করে। ভারতে শীতের অতিথি হিসাবে এটিকে প্রধানত পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে, অর্থাৎ সিকিম, অরুনাচল প্রদেশ, মেঘালয়, আসাম, মণিপুর এবং উত্তর ভারতের কিছু অংশে দেখা যায়।
প্রায় 100 বছর আগে এটি ভারতের একটি প্রধান শীতকালীন অতিথি ছিল। বিশেষ করে মণিপুরে এদের ঝাঁকে ঝাঁকে দেখা যেতো। সাম্প্রতিককালেও বিভিন্ন জায়গায় এদের দেখতে পাওয়ার কথা লেখা হয়েছে। 2008 সালে ফটোগ্রাফার অভিজ্ঞান সাহা মণিপুরের ফুলবাড়ি জলাভূমির কাছে 15-20টির এক ঝাঁক বান্টিং দেখেছিলেন। 2011 সালে পক্ষীবিদ গ্রিমিট ও সহযোগী এবং 2012 সালে রসমুসেন, অ্যান্ডারটন, ও তাঁদের সহযোগীদের লেখা এশিয়ার পাখিদের নিয়ে দুটো বিখ্যাত বই থেকে জানা যায়, পরিযানের সময় এই পাখিটাকে মাঝে মাঝে গাঙ্গেয় সমতলে দেখা যেতো [4,6]। 2021 সালের মে মাসের শেষদিকে এই পরিযায়ী প্রজাতির আবাসে ফিরে যাবার সময় দিল্লি, হরিয়ানার রোহতক, মধ্য ভারতের কিছু এলাকায় দেখা পাওয়ার রেকর্ডও আছে।
পরিযানকালে মানুষের শিকার
কিন্তু পরিযান-পথে অন্যান্য কয়েকটা দেশে পাখিগুলো মারাত্মকভাবে বিপদের সন্মুখীন হয়েছে। বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে জানা গেছে যে এদের সংখ্যা এবং পরিসর উভয়ই দ্রত হ্রাস পাচ্ছে। এটা সকলের নজরে আনে বার্ডলাইফ ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি সংস্থা। তারা দেখায় যে তিন প্রজন্মের মধ্যে ইউরোপে এই পাখির সংখ্যা 80% কমে গেছে [2]। তারা আরো একটি গবেষণার কথা বলে যেখানে দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী 1980 থেকে 2013 সালের মধ্যে এই প্রজাতির সংখ্যা 84.3-94.7% হ্রাস পেয়েছে। যদিও পতনটি প্রাথমিকভাবে ধীরে ধীরে শুরু হয়েছিল, তবে পরের কয়েক বছরে সেটা ত্বরান্বিত হয়েছে।
এর মূল কারণ হলো, কয়েকটা দেশে এই পাখিটাকে সুস্বাদু মাংস হিসাবে খাওয়া হয়। বার্ড লাইফ ইন্টারন্যাশনালের কথায়, পাখিটি প্রধানত চীনের মতো পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে অস্তিত্ব সংকটের মুখোমুখি হয়। এই পাখিরা হিমালয়ের উত্তরে বংশবৃদ্ধি করে এবং শীতকাল কাটায় উষ্ণ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। পরিযানের সময় এরা পূর্ব চীনের মধ্য দিয়ে যায়, যেখানে তাদের 2000 বছরেরও বেশি সময় ধরে শিকার করা হয়েছে। তবে সাম্প্রতিককালে চীনের জনসংখ্যার বৃদ্ধির সাথে সাথে পাখিটির শিকারও বেড়েছে।
চীন দেশে এটি ’‘ধানের পাখি’ নামে পরিচিত। চীনে বিভিন্ন উৎসবে মাংসের জন্য এদের ব্যাপক সংখ্যায় শিকার করা হয়। শীতকালে পাখির দল রাত্রিকালীন আবাসে বিশাল বিশাল ঝাঁকে জড়ো হয়, সেখানে শিকারিরা জালের ফাঁদ পেতে এদের শিকার করে। চীনের কিছু অংশে এই পাখির মাংসের জনপ্রিয়তা একটি মিথ থেকে এসেছে, যে এটি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে ও এর কামোদ্দীপক প্রভাব রয়েছে।
চীনা সরকার 1997 সালে শিকার ও পাখি হত্যা নিষিদ্ধ করেছিল। কিন্তু অবৈধ শিকার এখনও চলছে। 2013 সালেও লক্ষাধিক পাখিকে কালোবাজারে বিক্রি ও হত্যা করা হয়েছিল বলে এক গবেষণায় প্রকাশ। একটি সমীক্ষায় জানা যায় 2001 সালে শুধুমাত্র চীনের গুয়াংডং প্রদেশে 10 লক্ষ বান্টিং খাওয়া হয়েছে।
খাদ্য ছাড়াও চীনে হাজার হাজার পাখিকে মাস্কট হিসাবে শুকানো হয় ও বিক্রি করা হয়, কারণ অনেকের সংস্কার আছে যে এদের উপস্থিতি বাড়িতে সুখ ও সম্পদের প্রতীক। চীন ছাড়াও অন্য দেশেও এই পাখিগুলোকে শিকার করা হয়। যেমন, কম্বোডিয়ায় এই পাখিগুলিকে ধর্মীয় আচারে ব্যবহার করা হয়।
এছাড়াও ধান চাষের সেচ পদ্ধতি পরিবর্তনের ফলে শীতকালীন আবাসস্থলের পরিমাণ এবং গুণমান উভয়েই হ্রাস পেয়েছে। পাশাপাশি আবাসস্থলের কাছাকাছি নলখাগড়ার বনগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে পরিযায়ী বাসস্থানের এলাকাগুলি ক্রমশ সংকুচিত হয়ে পড়ছে।
এইসব কারণে যে পাখিটির একসময় প্রাচুর্য ছিল এখন তা বিলুপ্তির পথে। এখন পূর্ব ইউরোপ, জাপান এবং রাশিয়ায় এদের একটি বড়ো অংশ অদৃশ্য হয়ে গেছে। এক সময় আসামে এই পাখি প্রচুর সংখ্যায় পাওয়া যেতো, কিন্তু এখন তা বিরল হয়ে উঠেছে এবং 100 বছরের বেশি সময় ধরে দক্ষিণ আসামের বরাক উপত্যকায় পাখিটির কোন রেকর্ড পাওয়া যায়নি।
এইরকম অল্প সময়ে শিকারের কারণে বিলুপ্তি আগেও হয়েছে। এক সময় ইউরোপ ও এশিয়াতে প্রচুর সংখ্যক বন্য পায়রা (Passenger Pigeon) মাংসের জন্য নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছিল। 1914 সালের পর এখন তারা চিরতরে বিলুপ্ত।
আরো দক্ষিণেও রেহাই নেই
সেপ্টেম্বরে বর্ষা শেষ হলে যখন রাশিয়া, মঙ্গোলিয়া, চীনে শীত শুরু হয়, তখন নেপালের সমতলে ঝাঁকে ঝাঁকে বান্টিংরা আসে। নেপালের এক বিখ্যাত পক্ষীবিদ হেম বাহাদুর কাটওয়াল কৃষিজমির পাখিদের নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি বলেছেন, এই পাখিদের দেখে একদিকে যেমন তিনি আনন্দিত হন, আবার তিনি গভীরভাবে আশঙ্কিতও বোধ করেন কারণ অনেক পাখি হয়তো তাদের বাড়ি ফিরে যেতে পারবে না।
এখানকার স্থানীয় লোকেরা এদের ‘বগেরী পাখি‘ বলে ডাকে। প্রতিবছর বগেরী মাংস হিসাবে যেটা বিক্রি হয় সেটা মূলত হলুদ বুক বান্টিং। অনেক ভোজনরসিকের মতে, এটি পোল্ট্রি ফার্মের মুরগির চেয়েও বেশি সুস্বাদু। কাটওয়াল নেপালের মাধেশ প্রদেশের 55টি ভোজনালয়ে একটি সমীক্ষা পরিচালনা করেন। তাতে দেখা গেছে যে প্রতিদিন গড়ে 160 থেকে 180টি প্লেট বগেরীর মাংস প্রতিটি খাবারের দোকানে বিক্রি হয় (যদিও এগুলো সবই হলুদ বুক বান্টিংয়ের মাংস নয়)। সম্ভবত নেপাল জুড়ে এমন কয়েক হাজার খাবারের দোকান আছে যেখানে বগেরীর মাংস বিক্রি হয়। হিসেব করে দেখা গেছে, প্রতি বছর মাংসের চাহিদা মেটাতে প্রতি শীতে প্রায় 115000 থেকে 130000 সংখ্যক পাখিকে হত্যা করা হয়। কাটওয়াল বিলুপ্তির হাত থেকে এই পাখিদের বাঁচানোর জন্য আন্তর্জাতিক ও জাতীয় উভয় পর্যায়েই চেষ্টা করছেন।
নেপালের আরেক পক্ষীবিদ কৃষ্ণ ভুসাল বলেছেন, কয়েক দশক আগেও কাঠমান্ডু উপত্যকায় এদের প্রচুর সংখ্যায় দেখা যেতো। কিন্তু আজকাল এদের বড়ো ঝাঁকে খুঁজে পাওয়া কঠিন। শিকারের পাশাপাশি নেপালে এই প্রজাতির বাসস্থানও বিপন্ন। নেপালে শীতকালে কৃষিজমি এবং জলাভূমির কাছে এই পাখিদের দেখা যায়। কীটনাশক ব্যবহার, চাষের জমিতে বাড়ি তৈরি করা ও জলাভূমির দখল এদের বাসস্থানকে দারুণভাবে প্রভাবিত করেছে।
সংরক্ষণ পরিকল্পনা
বার্ড লাইফ ইন্টারন্যাশনালের এক পক্ষীবিদ ও হংকংয়ের অন্যতম সক্রিয় সংরক্ষণবাদী সিম্বা চ্যান বলেছেন: হলুদ বুক বান্টিং শিকার করা চীনে এক গুরুতর সমস্যা ছিল। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে পরিস্থিতির বেশ কিছু উন্নতি হয়েছে। এটি এখন সর্বোচ্চ জাতীয় সুরক্ষা সংস্থা বিভাগে তালিকাভুক্ত হয়েছে এবং স্থানীয় পাখি সংরক্ষণ সংস্থাগুলি দক্ষিণ চীনে পর্যবেক্ষণ ও শিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করেছে। 2020 সালের শেষের দিকে গুয়াংজুতে স্থানীয় সংরক্ষণ সংস্থাগুলি 15 নভেম্বর ‘আন্তর্জাতিক হলুদ বুক বান্টিং দিবস’ হিসাবে পালন করার প্রস্তাব করেছিল।
সিম্বা চ্যান মনে করেন, সংরক্ষণের সাফল্যের এই গল্প এশিয়ার লোকেদের সংরক্ষণ কার্যক্রমকে আরও অনুপ্রাণিত করবে। শুধুমাত্র এই পদক্ষেপগুলি এদের বাঁচাতে পারবে না যতক্ষণ না আইনটি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হয় ও এই পাখিদের ফাঁদ এবং বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়। ওনার কথায়, ‘আমরা পাখির জগতে এদেরকে আরেকটি যাত্রী পায়রা হতে দিতে পারি না।’
নেপালের কৃষ্ণ ভূসাল বলেছেন যে কনভেনশন অন মাইগ্রেটরি স্পিসিস (সিএমএস) নামক সংস্থা হলুদ বুক বান্টিংয়ের মতো প্রজাতির সুরক্ষার জন্য এগিয়ে এসেছে। ইতিমধ্যে প্রায় 128টি দেশ এতে উদ্যোগী হয়েছে, তবু নেপাল এখনও পর্যন্ত এতে অংশগ্রহণ করেনি। পরিবেশ কর্মীরা এই বিষয়ে নেপাল সরকারকে বাধ্য করতে আন্দোলন করছেন।
সংরক্ষণবাদীদের মতে, পাখি সম্পর্কিত কল্পকাহিনি দূর করার জন্য জনসাধারণের মধ্যে সমাজ সচেতনতা গড়ে তোলা ও নিরন্তর প্রচার জরুরি। নেপালে শকুন সংরক্ষণ অভি়যানের সাফল্য থেকে আমরা দেখেছি যে কোনো প্রজাতিকে বাঁচানোর জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদেরকেও অনুরূপ ব্যবস্থা অবলম্বন করতে হবে এবং সরকারকেও এগিয়ে আসতে হবে।
বোম্বে ন্যাচারাল হিস্ট্রির ভূতপূর্ব অধিকর্তা ও বিখ্যাত পক্ষীবিদ ও সংরক্ষণবাদী ডঃ আসাদ রহমানী বলেছেন, ভারতে আমুর বাজপাখি নিয়ে সংরক্ষণের উদাহরণ আছে। 2012 সাল পর্যন্ত নাগাল্যান্ডে স্থানীয় জনসাধারণ ঐতিহ্যগত অধিকারের নামে হাজার হাজার আমুর বাজপাখি শিকার করতো। কিন্তু ভারত সরকার, নাগাল্যান্ড সরকার এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি মিলিতভাবে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় তা বন্ধ হয়।
আশা করা যায় চীন ও অন্যান্য দেশের সরকারও এই ‘ধানের পাখিদের‘ ফাঁদে আটকানো বন্ধ করতে সক্ষম হবে।
তথ্যসূত্র
1.. Ali, S., & Ripley, S. D., 1987. Compact handbook of the birds of India and Pakistan together with those of Bangladesh, Nepal, Bhutan, and Sri Lanka. 2nd ed. Delhi: Oxford University Press. Pp. 1–737.
2.. Bird life International,2020, Species fact sheet: Emberiza aureola.
3.Choudhury, H., 2007, Christmas tour (Nepal), pp23-31.
4. Grimmett, R., Inskipp, C., & Inskipp, T., 2011. Birds of the Indian Subcontinent. 2nd ed. London: Oxford University Press & Christopher Helm. Pp. 1–528.
5. Naylor, M., & GC, S., 2005. Notes on birds recorded in Nepal, November–December 2005. Unpublished report. 27 pp. Pandey, M., 2019. Population and habitat assessment surveys of Yellow-breasted Bunting Emberiza aureola wintering in Pokhara Valley
6. Rasmussen, P. C., & Anderton, J. C., 2012. Birds of South Asia: the Ripley guide. 2nd ed. Washington, D.C. and Barcelona: Smithsonian Institution and Lynx Edicions. Vol. 2 of 2 vols. Pp. 1–683.
7. S., Bhatt, T. R., Khatiwada, M. P., Inskipp, T., Khatiwada, A. P., Gurung, S., Singh, P. B., Murray, L., Poudyal, L., & Amin, R., 2016. The status of Nepal’s birds: The national Red List series. London, UK: The Zoological Society of London. Vol. 3 of 6 vols. Pp. i–viii, 1–603.
8.Vyas, S., 2019. The birds of the Delhi area: An annotated checklist. Indian BIRDS Monograph 1: 1–128.
9.http://www.birdguide.com
10. Abhaya Raj Joshi, Winter sanctuary in Nepal proves a killing field for yellow-breasted buntings, Mongabay
11.Pengcheng Wang, Rong Hou, Yang Wu, Zhengwang Zhang, Pinjia Que, Peng Chen, Genomic status of yellow-breasted bunting following recent rapid population decline, iScience, Volume 25, Issue 7,2022
12. Asad Rahmani, By the Flock: Decline of the Yellow‑breasted Bunting, roundglass sustain