জলবায়ু পরিবর্তনের উপর সাজানো প্রথম পোস্টারটি ডাউনলোড করুন
‘বিজ্ঞান’ পত্রিকা কেন শুরু করা হয়েছিল, এর উত্তর দিতে গিয়ে সম্পাদকমন্ডলীর এক সদস্য একটা কলামে লিখেছিলেন: আমাদের স্বপ্ন একদিন লোকাল ট্রেনে যাত্রীদের মধ্যে পলিটিক্স, ক্রিকেট, সিনেমা-র সাথে সাথে বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা হবে। সেই শুনে আরেক সম্পাদকের মনে জেগেছিল সংশয়। সবাইকে কি বিজ্ঞানে উৎসাহী করা যায়?
কিন্তু উৎসাহ-অনুৎসাহর অনেকটাই তৈরী হয় ছোটবেলায়। যে ব্যক্তির ছোটবেলায় অঙ্ক কঠিন লাগে, হয়তো ঠিকভাবে না শেখানোর ফলে, সে সারা জীবন হয়তো কোন লেখাতে সংখ্যা-সমীকরণ দেখলে আর সেই লেখা পড়তেই সাহস পায় না। তাই, ‘বিজ্ঞান’-এর লেখা যখন ছোটদের কাছে পৌঁছতে লাগলো, যখন অনলাইন ‘বিজ্ঞান পত্রিকা’-র প্রিন্ট আউট বিভিন্ন স্কুলের দেওয়ালে স্থান পেল, তখন ওই উপরোক্ত দ্বিতীয় সম্পাদকের মনে হলো, ওই স্বপ্নটার মানে থাকলেও থাকতে পারে। হয়তো ছোটদের মধ্যে উৎসাহ জাগাতে পারলে অন্যান্য বিষয়ের মত বিজ্ঞানও স্বাভাবিক আলোচ্যবস্তু হয়ে যাবে।
অনলাইন ম্যাগাজিন বার করার কিছু পরের কথা। আমরা জানতে পারলাম যে বেশ কিছু স্কুলে রীডিং বোর্ডে বা দেওয়ালে এই অনলাইন পত্রিকার প্রিন্ট আউট স্থান পেয়েছে। মাষ্টারমশাইদের পাঠানো ছবি থেকে দেখলাম যে ছাত্রছাত্রীরা কৌতূহল ভরা চোখে সেই লেখাগুলো পড়ছে। এই সব ছবি দেখে আমাদের মনে হলো, পরিশ্রম খানিক হলেও সার্থক হয়েছে। সেই অনুপ্রেরণা থেকেই 2024-এ এক নতুন উদ্যোগ : বিজ্ঞান পোস্টার!
‘বিজ্ঞান পোস্টার’ কীভাবে ‘বিজ্ঞান’-এর অন্যান্য লেখার থেকে আলাদা?
- ‘বিজ্ঞান’ পত্রিকাতে বিভিন্ন স্বাদের এবং বিষয়ের বিজ্ঞানভিত্তিক লেখা প্রকাশিত হয়। একেকটা লেখাতে হয়তো অনেক গভীরে কোনো একটা বিষয়বস্তু আলোচনা করা হয়। সব লেখার পুরোটা হয়তো সবার পক্ষে বোঝাও সম্ভব না। কিন্তু পোস্টার চট করে পড়ার জন্য বানানো। একটা পোস্টার সেট-এ কোনো একটাই থীম থাকবে এবং যেহেতু মূলত ছাত্রছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে বানানো, চেষ্টা করা হবে যাতে স্কুলপড়ুয়াদের বোঝার মত হয়।
- পোস্টার-গুলো প্রিন্ট-রেডি হবে। এগুলোকে সহজেই A4 কাগজে প্রিন্ট করে যেকোনো জায়গাতে (স্কুল-কলেজ-পাড়ার ক্লাবের রীডিং বোর্ড বা বিজ্ঞান মেলায়) লাগানো যাবে। অর্থাৎ, এটিকে দেওয়াল পত্রিকার মত ব্যবহার করা যাবে।
আমাদের আশা যে শিক্ষক-শিক্ষিকারা পোস্টার-গুলো প্রিন্ট করে স্কুলের রীডিং বোর্ডে বা দেওয়ালে লাগাবেন, এবং ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ দেবেন সেগুলো পড়তে। সেই সাথে অনুরোধ রইলো ছাত্রছাত্রীরা পড়ছে, এমন ছবি সুযোগ করে আমাদের পাঠাবেন – [email protected] ঠিকানায়, যাতে আমরা আরও অনুপ্রাণিত হই। স্যোশাল মিডিয়াতেও ছবি, ভিডিও দিতে পারেন – #BigyanPosters দিয়ে ট্যাগ করুন, যাতে এই ছবিগুলো পরে একত্রিত করা যায়।
তবে শুধু পোস্টার প্রকাশ করেই ‘বিজ্ঞান’ থেমে থাকতে চায় না। আমরা চাই, পোস্টার-গুলো থেকে একটা আলোচনা শুরু হোক। সেই উদ্দেশ্যে পোস্টারের প্রতিটি পাতার নিচে একটা করে প্রশ্ন দেওয়া রয়েছে। এই প্রশ্নগুলো ছাত্রছাত্রীদের critical thinking করতে সাহায্য করবে – এমন আমাদের আশা। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পাঠানো যাবে এই লিঙ্কে।
এই প্রশ্নগুলোর শ্রেষ্ঠ উত্তরদাতাদের পুরস্কৃত করা হবে। উত্তরগুলোকে বিচার করার সময় এইটা দেখা হবে যে উত্তরদাতা কতটা নিজের ভাষায় বুঝিয়ে লিখেছে (বই থেকে সরাসরি নেওয়া বিবরণ এখন সহজেই ধরা যায়)। উত্তরগুলো ইংরেজি, বাংলা, ইংরেজি-বাংলা মিশিয়ে, যেকোনো ভাষায় হতে পারে।
প্রথম পোস্টার-এর বিষয় ‘জলবায়ু পরিবর্তন’। ‘জলবায়ু’ কথাটা একসময় কথাবার্তায় খুব একটা আসতো না, এখনো শুনলে কীরকম বইয়ের কথা মনে হয়। তার কারণ, কোনো ব্যক্তিবিশেষকে জলবায়ু নিয়ে মাথা ঘামাতে হয়না। সে রোজকার আবহাওয়া, ঝড়-বাদলা-বৃষ্টি, এইসবের সাথেই বেশি পরিচিত। কিন্তু এই রোজকার আবহাওয়ার আড়ালে যে একটা প্যাটার্ন বা ছক রয়েছে, এবং জলবায়ু নামক সেই প্যাটার্ন যে মানুষের কীর্তির ফলে পাল্টে যাচ্ছে, এই সত্যটা পরবর্তী প্রজন্ম এড়িয়ে যেতে পারবে না। তাই জলবায়ু নামক বস্তুটি কীভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে, তার কী প্রভাব পড়তে পারে, কী করা যায় সেই পরিবর্তনকে ঠেকাতে, প্রথম পোস্টার-এর পাতাগুলো আমরা সেই বিষয়ের উপরেই রেখেছি। এক এক পাতায় ধরা রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের একেক দিক। ‘বিজ্ঞান’-এর স্বেচ্ছাসেবীরা লেখাগুলো তৈরি করেছে ও ছবিগুলোর ভাবনা ভেবেছে। সেই ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিয়েছে কলকাতার Anonymous নামের এক পেশাদার সংস্থা। পোস্টার-এর এমন সুচিন্তিত ডিজাইনের জন্য আমরা এই সংস্থার কাছে অশেষ কৃতজ্ঞ।
পোস্টার-টা আপনি নিচের লিঙ্ক থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের উপর সাজানো প্রথম পোস্টারটি ডাউনলোড করুন
জলবায়ু পরিবর্তন সম্বন্ধে আরও জানতে এই পাতায় চোখ রাখুন।
আগামী পোস্টারগুলির দিকে নজর রাখুন নিচের পাতায়।