মজার ছলে বিজ্ঞান শেখার অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান দীঘা বিজ্ঞান কেন্দ্র। চলুন দেখি সেখানে কি হয়।
প্রথাগত শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে বিজ্ঞান শেখার চেয়ে হাতে কলমে বিভিন্ন ঘটনা পর্যবেক্ষণ করা ও বোঝা অনেক বেশি মজাদার। কিন্তু হাতেকলমে করবো বললেই করা যায় না। তার জন্য অনেক সময় সরঞ্জাম চাই, পরিকাঠামো চাই, অর্থ চাই। হাতেকলমে বিজ্ঞান হাতের নাগালে আনতে রাষ্ট্রীয় বিজ্ঞান সংগ্রহালয় পরিষদের বিভিন্ন শাখা বা কেন্দ্রগুলি জাতীয় স্তরে দীর্ঘদিন ধরেই ইতিবাচক ভুমিকা পালন করে চলেছে। বঙ্গোপসাগরের তটে দীঘা বিজ্ঞান কেন্দ্র এমনি একটি প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন প্রদর্শনী ও শিক্ষামূলক কর্মসূচীর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার জন্য দীর্ঘ দুই দশক ধরে তারা নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।
এই সংস্থার মূল লক্ষ্য হলঃ
১। বিভিন্ন মজাদার ও সহজ পরীক্ষার সাহায্যে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত ও জীবনবিজ্ঞান শেখানো। বিষয়গুলি কিন্তু পাঠ্য ক্রম থেকেই নেওয়া। তবে এভাবে শিখলে আশা করা যায় শিক্ষার্থীরা আগ্রহও পাবে, নিজে থেকে ভাবতেও শিখবে।
২। সাধারণ মানুষ ও ভ্রমনপিপাসু দর্শকদের কাছে বিজ্ঞান জনপ্রিয় করে তোলা। এর জন্য আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন ঘটনাকে আকর্ষণীয় প্রদর্শনীর সাহায্যে দেখানো হয়।
৩। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে ও সাধারণ মানুষের জন্য অভিজ্ঞ ব্যাক্তিদের নিয়ে আলোচনা সভা ও বিজ্ঞানের প্রয়োগভিত্তিক কর্মশালার আয়োজন করা।
তিনটি গ্যালারি, কয়েকটি প্রদর্শনী ও একটি বিজ্ঞান পার্ক নিয়ে গড়ে উঠেছে এই দীঘা বিজ্ঞান কেন্দ্র। গ্যালারি তিনটি হলঃ
১। আলোর প্রতিফলন ও তার বিভিন্ন ঘটনা তথা সূত্রকে ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে Reflection Gallery।
২। জীবন বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় যেমন জৈব প্রযুক্তি, জৈব বিবিধতা, ভারতীয় জৈব বৈচিত্র্য, জীবন্ত জীব জন্তুদের ক্রিয়াকলাপকে সরাসরি পর্যবেক্ষণের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য গড়ে তোলা হয়েছে জীবন বিজ্ঞান বা Life Science গ্যালারি।
৩। মজাদার বিজ্ঞান বা Fun Science Gallery তে আছে এমনি অনেক মজার প্রদর্শনী, যেমন – দ্রুতগতিতে জ্বলতে নিভতে থাকা আলোর মাধ্যমে টেবিল ফ্যানের ঘুরন্ত ব্লেডকে স্থির দেখানো বা আলোর প্রতিপ্রভাকে ব্যবহার করে নিজের ছায়াকে ফ্রেমে আটকে রাখা।
দীঘা বিজ্ঞান কেন্দ্রের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রদর্শনী হলঃ
১। ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ মানুষের মনে গ্রহ ও তারাদের বিষয়ে নানান ধারণা ও রাতের আকাশে তারাদের চিনিয়ে দেবার জন্য তারামণ্ডল।
২। ত্রিমাত্রিক জগতকে জানার জন্য 3D শো, space and astronomy শো।
৩। প্রতিফলনের সাধারণ ধারণাকে কাজে লাগিয়ে বিশেষ মজাদার ঘটনাকে দেখানোর জন্য 3D Anaglypha ।
সমাজের প্রতিটি স্তরে বিজ্ঞানকে জনপ্রিয়করনের জন্য এখানে যে কর্মযজ্ঞ চলেছে তা আরও ভালোভাবে জানতে গেলে অবশ্যই ঘুরে আসতে হবে দীঘা বিজ্ঞান কেন্দ্র।
প্রচ্ছদ এবং অন্যান্য ছবির সূত্র : দেবাশীষ ধর
valo laglo