প্রিয় বিজ্ঞানের পাঠকবন্ধুরা,
পরিবেশ পর্যবেক্ষণ প্রতিযোগিতার প্রথম পর্বে তোমাদের কাছ থেকে অনেক লেখা পেয়ে আমরা খুব উৎসাহিত হয়েছি। প্রত্যেকটা লেখাই অনবদ্য হয়েছিল, কিন্তু তাদের মধ্যে দুটি লেখার লেখকদের নজরদারির জুড়ি মেলা ভার। কুমোরে পোকার বাসা বানানো পর্যবেক্ষণ করে পাঠিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সঞ্চারী মুখোপাধ্যায় আর গাছের উপরে জড়িয়ে থাকা পরগাছার নজরদারি করেছে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের নয়নমণি রায়। এরা দুজনেই পরিবেশ পর্যবেক্ষণ প্রতিযোগিতার প্রথম পর্বের বিজয়ী। নিচে তাদের পাঠানো লেখা, ছবি, ও ভিডিও তুলে ধরলাম তোমাদের জন্য।
প্রিয় পাঠকবন্ধুরা, আবার তোমাদের আহ্বান করছি ‘বিজ্ঞান’-এর দরবারে তোমাদের আশেপাশের প্রকৃতি থেকে নানা পর্যবেক্ষণ পাঠাতে। পাঠাতে পারো লেখা, ছবি, বা ভিডিও। ছবি বা ভিডিও পাঠালে তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনাও পাঠিও। তোমাদের পাঠানো লেখা, ছবি, ভিডিও থেকে সম্পাদকমন্ডলীর সবথেকে পছন্দের কয়েকটি পুরস্কৃত হবে ও ‘বিজ্ঞান’-এর পাতায় ছাপা হবে। লেখা, ছবি, বা ভিডিও পাঠানোর আগে নিচে দেওয়া নিয়মগুলো একটু পড়ে নিও। তোমাদের লেখার অপেক্ষায় রইলাম।
নিয়মাবলী:
- লেখা, ছবি, বা ভিডিও পাঠাতে হবে ৩১শে ডিসেম্বর, ২০১৯-এর মধ্যে।
- ই-মেইলে পাঠাও লেখা, ছবি, বা ভিডিও – [email protected] । তোমাদের নাম ও ঠিকানা উল্লেখ কর।
- ভিডিও পাঠাতে হলে, ভিডিওটিকে youtube এ তুলে তার লিংক আমাদের পাঠালে ভালো। আর ছবি পাঠালে ছবির ক্যাপশন দিতে হবে। youtube-এ ভিডিও তোলার পদ্ধতি দেখে নাও এই পাতায়: https://support.google.com/youtube/answer/57407 লেখাগুলি অনধিক ৩০০ শব্দের মধ্যে হতে হবে এবং প্রত্যেক সংখ্যার জন্য একেকজন কেবল একটা লেখাই পাঠাতে পারবে।
- থাকছে আকর্ষণীয় পুরস্কার। সম্পাদকমন্ডলীর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত।
প্রথম ‘পরিবেশ পর্যবেক্ষণ প্রতিযোগিতা’র ফলাফল
প্রথম ‘পরিবেশ পর্যবেক্ষণ প্রতিযোগিতা’-র বিজয়ীরা হল কলকাতা থেকে সঞ্চারী মুখোপাধ্যায় ও চট্টগ্রাম থেকে নয়নমণি রায়।
—–
সঞ্চারী মুখোপাধ্যায় বর্তমানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীতত্ত্ব বিভাগে পিএইচডি করছে। সে আমাদের কুমোরে পোকার বাসা তৈরির একটি ভিডিও ও সংক্ষিপ্ত বর্ণনা পাঠিয়েছে। সেই ভিডিও ও বর্ণনা রইল এখানে (ইউটিউব লিংক)।
ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে Sceliphron sp. নামের এক mud dauber wasp কেমন নিখুঁত দক্ষতায়ে তার মাটির বাড়ি বানাতে ব্যস্ত।
কুমোরে পোকার বাসা
দরজার খাঁজে বাঁ জানলার কোণায়ে আমরা প্রায়শই কুমোরে পোকার বাসা দেখতে পাই। ভেজা মাটির ঢেলা দিয়ে নিখুঁত কায়দায়ে এই পোকারা তাদের বাসা বানায়। বোলতা প্রজাতির এইসব পোকাদের সবাইকে বাংলায়ে “কুমোরে পোকা” বলা হলেও বৈজ্ঞানিকভাবে এদের ভেতর প্রকারভেদ স্পষ্ট। যেসব কুমোরে পোকা কলসির মত কানা উঁচু গোলাকার বাসা বানায় তাদের ইংরাজিতে বলা হয় Potter Wasp (Vespidae family), আর যাদের বাসা হয় লম্বাটে তারা হল Mud Dauber Wasp (Sphecidae family)। দুই দল পোকাই তাদের মুখে করে কাদা মাটির ঢেলা বয়ে নিয়ে এসে এক আশ্চর্য কায়দায়ে তৈরি করে তাদের বাসা। সেই বাসায়ে তারা থাকেনা। বাসা বানানো শেষ হলে এই বোলতারা শিকারে বের হয়। Potter wasp শিকার করে শুঁয়োপোকা আর Mud dauber wasp ধরে আনে ছোট মাকড়সা। হুলের আঘাতে অর্ধমৃত এইসব শিকারদের দিয়ে বাসা ঠেসে ভর্তি হয়ে গেলে বোলতারা প্রতি বাসায়ে একটা করে ডিম পেড়ে তারপর সেই বাসার মুখ আবার ভাল করে কাদা দিয়ে বন্ধ করে দেয়। ডিম ফুটে বাচ্চা বেরলে সে আগে সেই অর্ধমৃত সব পোকাদের খেয়ে গায়ে শক্তি যোগায় আর তারপর বাসার মুখের শুকনো শক্ত মাটি কেটে বাইরে বেরিয়ে আসে। এই খাবার ভরা বাসা বানিয়ে দেওয়ার পর সচরাচর মা বোলতা আর তার ছানার খবর নিতে ফিরে আসেনা। ছানা বড় হয়ে নিজের মত উড়ে বেরিয়ে যায় বাসা থেকে।
কুমোরে পোকার উপর ‘বিজ্ঞান’-এ প্রকাশিত হয়েছিল ‘মায়েরা যেমন হয় – কুমোরে পোকার সন্তান পালন’ – এই লেখাটি।
নয়নমনি রায় বাংলাদেশের চট্টগ্রামের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা থেকে নিচের ছবি ও লেখা পাঠিয়েছে।
বর্ণনা – গাছটির দিকে তাকাতেই মনে হবে,’ওরে বাবা! পাতার লোমে আবৃত এ কোন গাছ।’ কিন্তু ফেলুদার মত খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করলেই বুঝা যাবে ঐ পাতাগুলো বড় গাছটির কোনো অংশ নয়। এগুলো এক ধরণের পরগাছা।এগুলোর নিজস্ব কান্ড রয়েছে যার সাথে মূল রয়েছে এবং মূল দ্বারাই এরা বড় গাছটি আকড়ে ধরে রাখে।খাদ্যও শোষণ করে মূলের সাহায্যেই।
দুই বিজয়ীকে অভিনন্দন জানাই। তোমাদের পুরস্কার হিসাবে একটি করে ফোল্ডস্কোপ ও একটি করে ‘বিজ্ঞান’ মুদ্রিত পত্রিকা ডাকযোগে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফোল্ডস্কোপ সম্বন্ধে জানো এখানে।
khub valo laglo pore, notun jinis jante parlam… asonkho avinondon bijoyider.