পিরামিডকে না ভেঙ্গে তার পেটের ভিতর কিভাবে উঁকি মারা যায়, সেই নিয়ে অনেকদিন ধরে ভাবনাচিন্তা চলছে। অবশেষে এক অপ্রত্যাশিত সাফল্য এলো গত বছর (২০১৭-র) নভেম্বর মাসে। খোঁজ পাওয়া গেলো গিজা-র গ্রেট পিরামিডের ভিতর একটা গোপন কুঠুরির। এটা খুঁজতে সাহায্য নেওয়া হলো এমন একটা কণার যেটা প্রতি মুহূর্তে মহাকাশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে বর্ষণ হচ্ছে আর আমাদের ভেদ করে বেরিয়েও যাচ্ছে, অথচ আমরা টেরই পাই না।
যদি ইজিপ্ট কখনো বেড়াতে যাও, গিজা-র গ্রেট পিরামিড-টা অবশ্যই তোমার বেড়ানোর তালিকায় থাকবে। বিশ্বের সাতটা আশ্চর্যের একটা বলে কথা! পিরামিডের ভিতর সুড়ঙ্গ দিয়ে নামতে নামতে হঠাৎ মাথার উপর দেখতে পাবে একটা প্যাসেজ উপরে উঠে যাচ্ছে। সেটা ধরে উঠে এলে এসে পড়বে বিশাল একটা গ্যালারিতে (কতকটা মিউজিয়াম-এর গ্যালারি-র মতো), দেখবে রাজারানীর কক্ষ। ভাবনাটা স্বাভাবিকভাবেই মনে জাগবে: না জানি আরো কত কি আছে এই বিশালকায় দৈত্যের জঠরে! পিরামিড খুঁড়ে ফালাফালা না করে এই প্রশ্নটার উত্তর দেওয়া এখন সম্ভব।
এই ধরণের দিব্যদৃষ্টি চাইলে প্রথমেই যেটা মাথায় আসে সেটা হলো এক্স-রে। মেট্রো রেল বা এয়ারপোর্ট-এর স্ক্যানার-এ যেভাবে ব্রিফকেস-এর ভিতর লুকোনো অস্ত্র খোঁজা হয়, সেই ভাবেই পিরামিড-এর ভিতর এক্স-রে পাঠিয়ে তার ভিতরের নাড়িনক্ষত্র জানা যায়। একদিক থেকে এক্স-রে ছাড়া হবে আর অন্যদিকে ধরা হবে। মাঝখান থেকে কোথায় কতটা এক্স-রে শোষিত হলো, তার থেকে বলা যাবে ভিতরের চালচিত্র। কিন্তু সে গুড়ে বালি। কারণ এক্স-রে পিরামিড-এর দেয়াল পেরিয়ে আসতে পারেনা। অর্থাৎ যেখানে যেখানে এক্স-রে-র উৎস বসানো সম্ভব আর যেখানে সনাক্তকরণ যন্ত্র বসানো সম্ভব, দুইয়ের মধ্যে ব্যবধানেই কোথাও আটকে যায় এক্স-রে।
এই সমস্যাটা শুধু পিরামিড-এর ভিতর উঁকি দিতে নয়, আরো অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়। ৯/১১-এর দুঃসাহসিকতার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সম্ভাব্য পারমাণবিক আক্রমণের আতঙ্ক বেড়ে গেছিলো। দেশের সীমান্তে কোনো ফাঁকফোকর দিয়ে ইউরেনিয়াম জাতীয় পারমাণবিক বোমার উপাদান পাচার হচ্ছে কিনা, সেই দিকে নজরদারি শুরু হলো। কিন্তু সমস্যা এটাই ছিল যে এক্স-রে লোহা পেরিয়ে গেলেও সীসা (লেড) জাতীয় ভারী ধাতুর দ্বারা শোষিত হয়ে যায়। তাই, যে বাক্সে বোমার উপাদান পাচার হচ্ছিলো, তার গঠনে সীসা মিশিয়ে দিলেই হলো। বাক্সের ভিতরে কি আছে, এক্স-রে স্ক্যানার তার হদিশ পাবে না। বা সঠিকভাবে বললে, তেজস্ক্রিয় উপাদানের খোঁজ পেতে যে শক্তির এক্স-রে-র প্রয়োজন হবে, সেই শক্তির এক্স-রের ধারেকাছে থাকলে স্ক্যানার পরিচালক বা ট্রাক ড্রাইভারদের তেজস্ক্রিয় বিকিরণ জনিত শারীরিক ক্ষতি হতে পারে। এক্স-রে পিরামিড-এর দেয়াল পেরিয়ে আসতে পারেনা। লস আলামোস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি থেকে এর সমাধান এলো। এক্স-রে যা ভেদ করতে পারে না, তাকে সহজেই ভেদ করে যায় আরেকটি কণা। ইলেক্ট্রনের সমান আধান কিন্তু ভীষণ ভারী (২০০ গুন-এর বেশি ভারী) এই কণা-র নাম হলো মিউয়ন (muon)।
মিউয়ন কি
মিউয়ন— এটা আবার কে অর্ডার দিলো? উক্তিটা যদিও নোবেল পুরষ্কারপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী আই. আই. রাবি-র, এই কণাটার কথা শুনে আমাদেরও এরকম মনে হতে পারে। যদ্দুর মনে পড়ে, ইস্কুলের পদার্থবিদ্যায় শিখেছিলাম, একটা অণু-র কেন্দ্রে প্রোটন-নিউট্রন এই দুটো কণা সমৃদ্ধ একটা নিউক্লিয়াস আছে আর তার চারিদিকে নির্দিষ্ট কক্ষে ঘুরপাক খাচ্ছে আরেকটা কণা: ইলেক্ট্রন। এই তিনটি কণা-র সাথেই পরিচয় হয়েছিল। ইদানিং ঈশ্বর কণা নিয়ে হুলুস্থুলু কর্মকাণ্ডের কল্যাণে কণা পদার্থবিদ্যা নিয়ে প্রায়ই আলোচনা শোনা যায় বটে, কিন্তু কোন কণা কোত্থেকে আসে আর কি তার বৈচিত্র, সেইটা ঠাওর করা মুশকিল।
সেই অন্ধকার দূর করার প্রচেষ্টা অন্যত্র করা যাবে। আপাতত আমাদের সবার পরিচিত ইলেক্ট্রন-এর কাঁধে চেপে মিউয়ন-কে বোঝা যাক। আগেই বলা হলো, এই কণাটা ইলেক্ট্রন-এর থেকে ২০০ গুন-এর বেশি ভারী। তাহলে ইলেক্ট্রন-এর কথা আসছেই বা কেন? সাদৃশ্যটা কোথায়? এদের কি ধরণের বল-এর দ্বারা প্রভাবিত করা যায়, মিল সেইখানটাতে। বল আবার কত ধরণের হয়? কণার মধ্যে বল হয় চার ধরণের: মাধ্যাকর্ষণ বল (গ্রাভিটেশনাল ফোর্স), তড়িচ্চুম্বকীয় বল (ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফোর্স), দৃঢ় বল (স্ট্রং ফোর্স) আর মৃদু বল (উইক ফোর্স)। প্রথম দুটোর সাথে আমরা পরিচিত। বস্তুর ভরের ফলে যে আকর্ষণ তৈরী হয়, সেটা মাধ্যাকর্ষণ আর আধানের ফলে যে বল তৈরী হয়, সেটা তড়িচ্চুম্বকীয় বল। তৃতীয়টার উদাহরণ আছে অণুর কেন্দ্রে নিউক্লিয়াস-এর মধ্যে: নিউট্রন আর প্রোটন-এর মধ্যে বাঁধুনি-টা আসে ওই দৃঢ় বলের কল্যাণেই। আর চতুর্থটা একটু অদ্ভুত: এর মাধ্যমে কেউ কাউকে আকর্ষণ করেনা, বরং ভেঙ্গে ফেলার (decay) জন্য দায়ী এই বল । মহাবিশ্বে উপস্থিত প্রাকৃতিক তেজস্ক্রিয়তার সিংহভাগের মূলে রয়েছে এই বল। এর ফলে এক ধরণের কণা তেজস্ক্রিয় বিকিরণের মাধ্যমে আরেক ধরণের কণায় পরিবর্তিত হয়। এর কয়েকটা উদাহরণ একটু পরেই দেখবো। ইলেক্ট্রন আর মিউয়ন একই ধরণের বলের দ্বারা প্রভাবিত হয়। এই গোত্রের কণাদের বলে লেপ্টন। এই চার ধরণের বলের মধ্যে তৃতীয়টা ছাড়া বাকি সবকটা বল-এর দ্বারাই একটা ইলেক্ট্রন-কে প্রভাবিত করা যায়।
ইলেক্ট্রন-জাতীয় কণা, যারা দৃঢ় বল-এর দ্বারা প্রভাবিত হয়না, তাদের একটা বিশেষ নাম আছে। এদের বলে লেপ্টন। এই লেপ্টন প্রজাতির কণা-র আরেকটা উদাহরণ হলো মিউয়ন। এছাড়াও ইলেক্ট্রন-এর সাথে মিউয়ন-এর আরেকটা সাদৃশ্য আছে। একটু আগেই যেটা বললাম: দুজনেরই একই আধান। অর্থাৎ আরেকটা আধানযুক্ত পদার্থের উপস্থিতিতে তার উপর ইলেক্ট্রনের সমান বল প্রযুক্ত হয়। (সব লেপ্টনদের ক্ষেত্রে এটা হওয়ার প্রয়োজন নেই।) তফাতটা শুধু ওই ভরেই। আর সেই তফাতের কারণেই ইলেক্ট্রন যা ভেদ করতে পারেনা, মিউয়ন অনায়াসে সেটা পারে। তবে সেই গল্পে আসছি। আগে দেখা যাক, মিউয়ন পাবো কোত্থেকে।
মিউয়ন আসে কোত্থেকে
দৃষ্টিগোচর উৎস ছাড়াই যদি কোনো কিছু আমাদের সামনে হাজির হয়ে যায়, তখন এই প্রশ্নটা করা হয়ে থাকে: “তবে কি আকাশ থেকে পড়লো?” মিউয়ন বাস্তবিকই আকাশ থেকে পড়ে। বহির্বিশ্ব থেকে আমাদের বায়ুমণ্ডলে যেসব কণা বর্ষণ হয়, তারা বায়ুমণ্ডলের অণুসকলের সাথে ধাক্কা খেয়ে অনেক ক্ষণস্থায়ী কণা সৃষ্টি করে। তার একটা হলো পায়ন (pion)। তার থেকে অচিরেই তৈরী হয় মিউয়ন। খানিকটা এরকম বিক্রিয়ার মাধ্যমে:
বাঁদিকে রয়েছে আধানযুক্ত পায়ন () আর ডানদিকে রয়েছে একই আধানের মিউয়ন () আর একটা নিউট্রিনো ()।
এই মিউয়নরা নিজেরাও ক্ষণস্থায়ী। তাই এদের দেখতে পাওয়ার কথা না। ভেঙ্গে যাওয়ার কথা ইলেক্ট্রন আর নিউট্রিনো-তে।
মিউয়ন-এর গড় আয়ু ২.২ মাইক্রোসেকেন্ড। এক মাইক্রোসেকেন্ড মানে এক সেকেন্ড-এর দশ লক্ষ ভাগের এক ভাগ। এত কম আয়ুতে এদের কোনো কাজে লাগার কথা নয়। কিন্তু মজাটা হলো ওই গড় আয়ুটা মিউয়ন-এর রেস্ট ফ্রেম-এ, অর্থাৎ এমন একটা পর্যবেক্ষকের সাপেক্ষে যার কাছে মিউয়নটা স্থির রয়েছে। কিন্তু আসলে তো মিউয়ন প্রায় আলোর কাছাকাছি গতিবেগে ধেয়ে আসছে। মিউয়ন-এর গড় আয়ু কি পৃথিবীর সাপেক্ষেও ওই মাইক্রোসেকেন্ড-এর ঘরেই থাকছে?
এইখানেই আইনস্টাইন-এর বিশেষ আপেক্ষিকতাবাদ চলে আসে। ধরো একজন পর্যবেক্ষক স্থির রয়েছে আর অন্য একজন গতিশীল। আইনস্টাইন-এর বিশেষ আপেক্ষিকতাবাদ বলে যে আলোর গতিবেগ দুজনের কাছেই এক। তা কি করে সম্ভব? দুজনে যে দুটো গতিতে চলছে! এটা তখনি সম্ভব যদি দুজনের ঘড়ি একই ঘটনার মধ্যে আলাদা সময়ের ব্যবধান দেখায়। অর্থাৎ একজনের ঘড়ি যদি অন্যজনের তুলনায় স্লো হয়ে যায়। হিসেবটা কষলে দেখা যাবে যে চলন্ত ফ্রেম-এ ঘড়ির কাঁটাটা ধীরগতিতে চলে। এই নিয়ে আরো গভীরে জানতে এই লেখাটা পড়ো। মিউয়ন ক্ষণস্থায়ী হলেও গতির কারণে পৃথিবীর সাপেক্ষে তার আয়ু বেড়ে যায়। অর্থাৎ যেটা মিউয়ন-এর রেস্ট ফ্রেম-এ ছিল ২.২ মাইক্রোসেকেন্ড মাত্র, সেটা পৃথিবীর সাপেক্ষে দেখলে অনেক বেড়ে যায়। পৃথিবীতে বসা পর্যবেক্ষক বলে, “মিউয়ন-এর ঘাড়ে চাপা পর্যবেক্ষকের ঘড়িটা ঠুকুস ঠুকুস চলছে। যে দুটো ঘটনার মধ্যে ব্যাটা ২.২ মাইক্রোসেকেন্ড মাপলো, আমার ঘড়িতে তার মধ্যে অনেক বেশি সময় পেরিয়ে গেছে।” কত বেশি সেটা নির্ভর করছে মিউয়ন কত দ্রুত ধেয়ে আসছে তার উপর। কিন্তু মোদ্দা কথা হলো, যথেষ্ট সংখ্যক মিউয়ন বায়ুমণ্ডল পেরিয়ে পৃথিবীতে আছড়ে পড়ার সময় পায়। অনেক ক্ষেত্রে সেই আছড়ে পড়া মিউয়নদের কাজে লাগিয়েই কিস্তিমাত করা যায়।
কোনো দেওয়াল-ই যাদের আটকাতে পারেনা
কথাটা একটু বাড়াবাড়ি হয়ে গেলো বটে, কিন্তু এক্স-রে বা ইলেক্ট্রন-এর তুলনায় দেখলে মিউয়ন-এর অনুপ্রবেশ শক্তি বা পেনিট্রেটিং পাওয়ার (penetrating power) অনেক বেশি।
এক্স-রে-র কথা এসে পড়ছে কারণ এক্স-রে এখনো অব্দি এইসব বাধা পেরোনোর কাজে চ্যাম্পিয়ন ছিল। কিন্তু মিউয়ন-এর তুলনায় তাকে একদম ছিঁচকে বলা চলে। ব্যবহারিক এক্স-রে-র সর্বোচ্চ শক্তি ১০০ keV (কিলো ইলেক্ট্রন-ভোল্ট) অব্দি পৌঁছয়। এই শক্তি-র এক্স-রে কণা-কে সীসা জাতীয় ভারী মৌল আটকে দিতে পারে। কিভাবে আটকায়? এই শক্তির এক্স-রে-কে শোষণ করে একটা পরমাণুর কেন্দ্রের কাছাকাছি ইলেক্ট্রন দূরের কক্ষে লাফিয়ে যেতে পারে। যেহেতু ভারী মৌলর ক্ষেত্রে দূরের কক্ষগুলো আরো দূরে হয়, তাতে লাফাতে বেশি শক্তি লাগে। তাই বেশি শক্তির এক্স-রে-কে শোষণ করতে ভারী মৌলর দরকার পড়ে। কিন্তু ভারী মৌল থাকলে এক্স-রে শোষিত হয়ে যায়।
অপরদিকে, মিউয়ন-এর ভর অনেক বেশি এবং গতিবেগ প্রায় আলোর কাছাকাছি হওয়ায় তার গতিশক্তি বা কিনেটিক এনার্জি (kinetic energy) এক্স-রের শক্তির থেকে অনেক বেশি। হিসেবে কষলে দেখা যাবে যে একটা চলন্ত মিউয়ন-এর গতিশক্তি ১০৫.৭ MeV হয়ে যায় যদি তার গতি আলোর গতিবেগের ৮৫ শতাংশ হয়। এবং মিউয়ন-রা সেই গতিতে পৌঁছেই থাকে। এই গতিশক্তি এতো বেশি যে উপরিউক্ত এক্স-রে শোষণ পদ্ধতি-র কথা ভাবাই যায়না। কেননা, কোনো অণু-র ইলেক্ট্রন-ই এই পরিমাণ শক্তি শোষণ করতে পারেনা। সাধারণ এক্স-রে-র তুলনায় মিউয়ন-এর গতিশক্তি অনেক বেশি, তাই এক্স-রে যা ভেদ করতে পারে না, মিউয়ন অনায়াসেই পারে। এছাড়াও এক্স-রে জনিত শারীরিক ক্ষতির সম্ভাবনা তো আছেই। বহির্বিশ্ব থেকে আসা মিউয়ন প্রতিনিয়ত আমাদের শরীরের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করে, তাই তার থেকে শারীরিক ক্ষতি হওয়ার থাকলে এদ্দিনে হয়ে যেত। সেসবের কোনো ভয় নেই। শুধু তাই না, মিউয়ন-নির্ভর সনাক্তকরণ যন্ত্র এক্স-রে যন্ত্রের থেকে সস্তাও বটে।
মিউয়ন-এর সঙ্গে আরেকটা কণার তুলনা করা যায়, সেটা হলো ইলেক্ট্রন নিজে। তুলনাটা করা যাক আগে শেখা চার ধরণের বল-এর মাধ্যমে:
- দৃঢ় বল (strong force): ইলেক্ট্রন আর মিউয়ন উভয়েই পরমাণুর কেন্দ্রের নিউক্লিয়াস-এর দৃঢ় বলের আকর্ষণে ধরাশায়ী হয়না। একটু আগেই যেটা বললাম, দুজনেই লেপ্টন গোত্রের কণা।
- মৃদু বল (weak force): মিউয়ন মৃদু বলের কাছে ধরাশায়ী হয় বটে। তবে আগেই যেটা বললাম, ধরাশায়ী হওয়ার আগে বিশেষ আপেক্ষিকতাবাদের হিসেবে তাদের আয়ু পৃথিবীর সাপেক্ষে বেড়ে যায়।
- মাধ্যাকর্ষণ বল (gravitational force): এই আয়ুর মধ্যে মিউয়ন বাকি দুটো বল অর্থাৎ মাধ্যাকর্ষণ আর তড়িচ্চুম্বকীয় বলের আওতায় পড়ে। মাধ্যাকর্ষণ বল কণা-র জগতে তড়িচ্চুম্বকীয় বলের তুলনায় এত নগণ্য যে তাকে পাত্তাই দেওয়া হয়না।
- তড়িচ্চুম্বকীয় বল (electromagnetic force): পরমাণুর কেন্দ্রের নিউক্লিয়াস-এর দৃঢ় বলের কাছে ধরাশায়ী না হলেও তার তড়িচ্চুম্বকীয় বলের কাছে ইলেক্ট্রন আর মিউয়ন উভয়েই ধরাশায়ী হয়। ঠিক কিভাবে ধরাশায়ী হয়, সেই বিবরণ-এ যাচ্ছি না। শুধু এইটুকু বলছি যে একটা তড়িচ্চুম্বকীয় ক্ষেত্রে একটা আধানযুক্ত কণা যখন আস্তে হয়ে যায়, তখন সে বিকিরণের মাধ্যমে শক্তি হারায়। এই বিকিরণকে বলে ব্রেমস্ট্রালুং (Bremsstrahlung)। এখানেই এই ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে যে মিউয়ন ইলেক্ট্রন-এর তুলনায় ২০৭ গুন ভারী। তড়িচ্চুম্বকীয় বলের উপস্থিতিতে সে প্রভাবিত হয় কম, তাই ব্রেমস্ট্রালুং বিকিরণের মাধ্যমে শক্তিও হারায় কম।
এতো কথা বলার একটাই উদ্দেশ্য: সব দিক দিয়ে দেখলে মিউয়ন-এর সাথে যার তুলনা চলে, সেই ইলেক্ট্রন মিউয়ন-এর তুলনায় অনেক তাড়াতাড়ি শক্তি হারিয়ে ফেলে। তাই ইলেক্ট্রন যা ভেদ করতে পারেনা, মিউয়ন অনায়াসে তা ভেদ করে।
মিউয়ন টোমোগ্রাফি বা মিউয়ন-এর সাহায্যে থ্রী-ডি ছবি আঁকা
মিউয়ন-এর উৎস তো হলো, মুফতে পাওয়া যায়। সে যে পদার্থকে ভেদ করে অনেক কণা-র থেকে বেশি গভীরে যেতে পারে, সেটাও বোঝা গেলো। কিন্তু এর ইস্তামাল-টা ঠিক কিভাবে হবে? মূল নীতিটা এইরকম: বড় ক্রেট হোক কি পিরামিড-এর দেওয়াল, ওই বাইরের আবরণের আড়ালে একটা কাঠামো আছে। কোথাও ফাঁপা, কোথাও ভরাট। টোমোগ্রাফি-র উদ্দেশ্য ওই কাঠামোটাকে কম্পিউটার-এর মধ্যে পুনর্নির্মাণ করা, কোনো একটা মাপজোখের সাহায্যে। মিউয়ন টোমোগ্রাফি-তে যেটা মাপা হয়, সেটা হলো দেওয়াল বা বাক্স পেরিয়ে মিউয়ন-এর কতটা দিশা পরিবর্তন হলো। টোমোগ্রাফি-র উদ্দেশ্য হলো বস্তুর অভ্যন্তরীণ কাঠামোটাকে কম্পিউটার-এর মধ্যে পুনর্নির্মাণ করা, কোনো একটা মাপজোখের সাহায্যে।
ধরা যাক, বাক্সের পুরোটাই ফাঁপা আর দেওয়ালটাও পুরু নয়। মিউয়ন মোটামুটি সরলরেখায় বাক্সটা পেরিয়ে যাবে। দিশার সাথে মিউয়ন-এর যে ডিস্ট্রিবিউশন বা অ্যাঙ্গুলার ডিস্ট্রিবিউশন বাক্সে ঢোকার আগে ছিল, বাক্স পেরিয়েও তাই থাকবে। দিশার সাথে ডিস্ট্রিবিউশন-এর অর্থ হলো কোনদিকে তাক করলে কটা মিউয়ন ধরা যাচ্ছে, সেই বিন্যাস। আবার বাক্সটা পুরোটাই যদি ভর্তি থাকে, তাহলে মিউয়ন তার শুরুর দিশা থেকে ভ্রষ্ট হবে। সেরকম দূরত্ব পেরোতে হলে মিউয়ন হয়তো ওপারে পৌঁছবেই না, এদিক ওদিকে ছিটকে যাবে। এবার এর মাঝামাঝি কিছু হলে, অর্থাৎ কোথাও ফাঁপা, কোথাও ভরাট, তখন মিউয়ন-এর গতিপথ পরিবর্তনটা নির্ভর করবে কতটা ফাঁকা জায়গা পেরোচ্ছে, তার উপর। যদি বেশিটা ফাঁকা জায়গা পার হয়, দিশা পরিবর্তনের সম্ভাবনা কমে যাবে।
তাই, দিশার সাথে মিউয়ন-এর ডিস্ট্রিবিউশন-টা মাপলেই মোটামুটি বোঝা যায় বাক্সের ভিতর কোন্খানটা ফাঁপা, কোনখানটা ভরাট। কিভাবে সেটা মাপা হলো পিরামিড-এর ভিতর, সেখানেই বিজ্ঞানীদলের কারসাজি।
মিউয়ন-এর পদচিহ্ন
গিজা-র পিরামিড-এ তিনভাবে মাপা হয়েছিল পলায়নরত মিউয়ন-এর দিশা। পাছে একভাবে মাপলে মাপার পদ্ধতির কোনো খামতির ফলে যদি ভুল থেকে যায়, তাই এই ব্যবস্থা। এরকম ভুল-এর নজির পর্যবেক্ষণের ইতিহাসে রয়েছে বেশ কিছু। যেমন, ২০১১-তে আলোর থেকে দ্রুতগতির নিউট্রিনো-র খোঁজ পাওয়াতে হৈচৈ পড়ে গেছিলো। পরে দেখা গেল যে যন্ত্রে লুজ কানেকশন। এক্ষেত্রে সেই সম্ভাবনা কমাতে তিনটে আলাদা আলাদাভাবে মাপা হলো মিউয়ন-এর বাহির পথ-এর দিশা।
সবচেয়ে পোর্টেবল মাপার যন্ত্র বেরিয়েছিল জাপান-এর নাগোইয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের হাত দিয়ে। নিউক্লিয়ার এমালশান ফিল্ম। জিনিসটা একটা আয়তাকার প্লেট, সাধারণ ফটোগ্রাফিক প্লেট-এর নীতিতেই কাজ করে। মিউয়নকণা এর মধ্যে দিয়ে গেলে তার ছাপ রেখে যায়। সেই ছাপ দেখতে হলে পরে ফিল্মটা ডেভেলপ করতে হয়।
কিভাবে ছাপ রেখে যায়? সিলভার হ্যালাইড স্ফটিক দিয়ে প্রলিপ্ত এই প্লেটগুলো। মিউয়নকণা সিলভার হ্যালাইডকে সিলভার অর্থাৎ রূপোতে পরিণত করে। এর ফলে মিউয়নকণা যখন প্লেট-এর মধ্যে দিয়ে যায়, তার যাত্রাপথে কিছু রূপোর দানা ফেলে রেখে যায়। পরে প্লেট ডেভেলপ করার সময় ওই প্লেটটাকে ধুয়ে ফেলা হয় যাতে সিলভার হ্যালাইড ধুয়ে যায়, খালি রূপোর দানাগুলো পড়ে থাকে। এবং সেই থেকেই মিউয়ন-এর যাত্রাপথের কথা টের পাওয়া যায়।
খেয়াল করো যে মিউয়নবাবাজী-র যাত্রাপথটা একটা প্লেট-এর উপর একটা কোটিং বা প্রলেপের মধ্যে দিয়ে। অর্থাৎ স্বল্পদৈর্ঘ্যের যাত্রাপথ। সেই প্রলেপের মধ্যে দানাগুলো যদি মোটা মোটা হয়, তাহলে তার থেকে মিউয়ন-এর দিশা বোঝা মুশকিল। এটা বুঝতে একটা গোদা উদাহরণ নেওয়া যাক। ধরা যাক, সিলভার হ্যালাইডের দানাগুলো এমন মোটা যে মিউয়নপ্লেট পেরোতে পেরোতে সিলভার হ্যালাইড থেকে একটা রূপোর দানাকেই তৈরী করতে পারলো। প্লেট ধুয়ে সেই একটা দানা দেখে কারো বোঝার সাধ্যি নেই মিউয়ন কোন দিক থেকে এসেছিলো। এবার দানাগুলো আরেকটু ছোট করা যাক যাতে মিউয়ন তার যাত্রাপথে দুটো রূপোর দানা ফেলে যায়। একটার পর একটা। এটা থেকে কিছুটা আন্দাজ করা যাবে কোন দিক থেকে মিউয়ন প্রবেশ করেছিল। এইভাবে, দানা যত ছোট হবে, মিউয়ন-এর পথের দিশা তত সূক্ষ্মভাবে মাপা যাবে।
নাগোইয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা তাদের প্লেট-এ ন্যানোমিটার সাইজ-এর দানা ব্যবহার করলেন যাতে অতি সূক্ষ্মভাবে মিউয়ন-এর যাত্রাপথ বার করা যায়। প্লেটগুলো বসালেন পিরামিড-এর এমন জায়গায় যেখানে পৌঁছনো যায়: রানীর কক্ষের মধ্যে আর তার পাশের একটা খাঁজে। ফটোগ্রাফিক প্লেট বসানোর একটা বড়ো সুবিধে হলো, কোনো ইলেকট্রিসিটি লাগবে না সেগুলোকে “চালু” রাখতে। পিরামিড-এর আনাচে কানাচে যেখানে দরকার বসানো যাবে।
এটাই ছিল পিরামিড-এর গঠন নির্ণয় করার সূক্ষ্মতম পদ্ধতি। কিন্তু আরো দুটো যন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল এই খানাতল্লাশিতে। একটা হলো সিনটিলেটর হোডোস্কোপ (scintillator hodoscope), যেখানে মিউয়ন-এর যাত্রাপথটা বিন্দু বিন্দু আলোর পাল্স-এ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। এটাও এসেছিলো জাপানিদের থেকে (সংস্থার নাম KEK)। দ্বিতীয় যন্ত্রটা এসেছিলো ছিল একটা ফরাসী সংস্থার থেকে। সেটা একটা মূলত আর্গন (Argon) ভর্তি গ্যাস চেম্বার গোছের যন্ত্র যাতে মিউয়ন-এর যাত্রাপথ সহজেই ধরা পড়ে। তবে সেটা পিরামিড-এর ভিতর বসানো যেত না। পিরামিড-এর বাইরে বসিয়ে মিউয়ন গোনা হয়েছিল।
পর্যবেক্ষণের ফলে কি বেরোলো
১৯৭০ সালে মিউয়ন-এর সাহায্যে খাফ্রে-র পিরামিড-এ এই পর্যবেক্ষণটাই করা হয়েছিল। অবশ্য তখন ফুজিফিল্ম কোম্পানি-র সাথে বার করা নাগোইয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরী উন্নত ফটোগ্রাফিক প্লেট ছিল না। যাই হোক, সেবার বলার মত কিছু পাওয়া যায়নি।
এবার যে কিছু পাওয়া যাবে, সেইরকম কোনো আভাস ছিল না। ফটোগ্রাফিক প্লেট-এ ধরা মিউয়ন-এর অ্যাঙ্গুলার ডিস্ট্রিবিউশন (কোনদিকে কটা মিউয়ন, সেই ছবি বা প্লট) কম্পিউটার-এ ফেলা হলো। যেমন আশা করা হয়েছিল, কিছু দিকে প্রচুর মিউয়ন, কিছু দিকে অপেক্ষাকৃত কম। তবে পিরামিড-এ যে কিছু ফাঁপা জায়গা রয়েছে, সেটা তো জানাই আছে: পূর্বোক্ত রাজার কক্ষ, রানীর কক্ষ, গ্র্যান্ড গ্যালারি। সেগুলোকে ধরে নিয়ে কোনদিকে কটা মিউয়ন পাওয়া উচিত, অঙ্ক কষে সেটার একটা প্লট বা ছবি তৈরী করা হলো। আসলে পাওয়া মিউয়ন-এর বিন্যাস আর অঙ্ক কষে পাওয়া বিন্যাস, এই দুটোকে একটার ওপর আরেকটা ফেলে দেখা হলো (নিচের ছবিটা তার মধ্যে একটা)। আগে থেকে জানা স্ট্রাকচারগুলোর জন্য যেদিকে যেদিকে বেশি মিউয়ন পাওয়া উচিত, দুটো ছবিতেই সেটা ধরা পড়ছিলো। খালি একটা বিশেষ জায়গায় আসলে পাওয়া ছবিতে উটের কুঁজের মতো হঠাৎ করে মিউয়ন-এর সংখ্যা উপরে উঠে গেছিলো, কিন্তু অঙ্ক কষে বানানো ছবিতে সেটা পাওয়া যায়নি।
সূত্র: https://arxiv.org/abs/1711.01576
তিন ধরণের পদ্ধতিতেই অঙ্কের সাথে আসল পর্যবেক্ষণে এই তফাৎ পাওয়া গেল। অর্থাৎ নিশ্চয়ই কিছু একটা হচ্ছে: যন্ত্রপাতির কারসাজি নয়। বিশেষ একটা দিশায় মিউয়ন-এর অপ্রত্যাশিতভাবে বেশি সংখ্যার একটাই ব্যাখ্যা হয়। চেনা কুঠুরিগুলো ছাড়াও আরেকটা ফাঁকা জায়গা রয়েছে পিরামিড-এর মধ্যে। ছোটোখাটো ফাঁকফোকর নয়, জায়গাটা প্রায় গ্র্যান্ড গ্যালারি-র সাইজের। এখন সেটা চারদিক দিয়ে বন্ধ আরেকটা গুপ্ত কক্ষ না পিরামিড-এর ডিসাইন-এই ওরকম অপ্রয়োজনীয় ফাঁকফোকর রয়েছে, সেটা বুঝতে আরো পর্যবেক্ষণ লাগবে। তবে শিগগিরই গ্রেট পিরামিড-এর ইতিহাস-এর আরেকটা “দরজা” খুলতে চলেছে। বিশেষ একটা দিশায় মিউয়ন-এর অপ্রত্যাশিতভাবে বেশি সংখ্যার একটাই ব্যাখ্যা হয়: চেনা কুঠুরি ছাড়াও ফাঁকা জায়গা রয়েছে পিরামিড-এর মধ্যে। ‘বিগ ভয়েড’ বা ‘বৃহৎ গহ্বর’। অজানা গোপন কুঠুরিকে এই নামে ডাকছেন গবেষকরা। এই বিষয়টা ঘিরে একটা গোটা মিশন চালু হয়েছিল: স্ক্যান পিরামিডস। ওদের ওয়েবসাইট-এ অনেক মজাদার ভিডিও দেখতে পারো এই বিষয়ে: https://www.scanpyramids.org/। গ্রেট পিরামিড-এর ভিতর এই আবিষ্কারের ফলে স্বাভাবিকভাবেই তারা উচ্ছ্বসিত।
উপসংহার
পিরামিড-এর নির্মাণকার্য নিয়ে ২০১৩-এ প্যাপাইরাস-এ লেখা নথিপত্র পাওয়া গেলেও পিরামিড-এর গঠন বা ভিতরে কি থাকার কথা, সেই নিয়ে কিছু লিপিবদ্ধ নেই বা পাওয়া যায়নি (পিরামিড-সংক্রান্ত নথিপত্র আবিষ্কারের কথা নিচের রেফারেন্স-এ দেখুন)। পিরামিড-কে অক্ষুণ্ণ রেখে কিভাবে সেই ইতিহাসের নাগাল পাওয়া যায়, সেটা নিয়ে কম ঘাম ঝরাননি গবেষকরা।
ঠিক সাহায্যটা এলো কণা পদার্থবিদদের কাছ থেকে। এই আবিষ্কারে আবার প্রমাণিত হলো যে কোনটা কাজের বিজ্ঞান, কোনটা অকাজের, সেটা আগে থেকে নির্ণয় করা প্রায় অসম্ভব। বহির্বিশ্ব থেকে আসা মহাজাগতিক রশ্মিকে এবং বিশেষ করে তার থেকে জাত মিউয়নকণাকে যে ইতিহাসের গবেষণায় লাগানো যাবে, এটা কেউই কখনো ভাবতে পারেনি।
মিউয়ন টোমোগ্রাফি-র আরো চমকপ্রদ ব্যবহার রয়েছে। আগেই বললাম, লেড শিল্ডিং বা সীসা-র রক্ষাকবচ পেরিয়ে তেজস্ক্রিয় পদার্থ শনাক্ত করতে এখন মিউয়ন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ২০১১-তে ফুকুশিমা দাইচি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র যখন ভূমিকম্পের ফলে বিকল হয়ে গেল, জাপান সরকার সিদ্ধান্ত নিলেন সেটাকে বন্ধ করে দেওয়ার। কিন্তু বন্ধ করবো বললেই তো করা যায়না। ভিতরে কতটা তেজস্ক্রিয় উপাদান বেঁচে রয়েছে এবং সেটা গলে গিয়ে কোথায় এসে আটকেছে, সেটা নির্ণয় করতে হবে। তবেই সেই উপাদানকে সরিয়ে জায়গাটাকে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের থেকে মুক্ত করার একটা ছক বানানো যাবে। কিন্তু পারমাণবিক চুল্লীতে ঢুকে সেই মাপজোখটা করবে কে? আবার পরিত্রাতারূপে দেখা দিলো মিউয়নকণা। এরকম আরও আছে।
মিউয়ন টোমোগ্রাফি যে কোন্ কোন্ দিকে ডানা মেলবে, সেটা আজকে বসে বলা সম্ভব না। তবে অনেক গভীর সমস্যার যে সমাধান হবে, সেটা নিশ্চিতভাবে বলা যায়।
(প্রচ্ছদের ছবির সূত্র: https://www.scanpyramids.org)
কৃতজ্ঞতা স্বীকার:
এই লেখাটি প্রস্তুত করতে সাহায্য করেছেন পদার্থবিদ্যার গবেষক ও ‘বিজ্ঞান’-এর স্বেচ্ছাসেবক শ্রীনন্দা ঘোষ এবং অনির্বাণ ঘোষ।
তথ্যসূত্র:
- মূল পেপার: https://www.nature.com/articles/nature24647
- নিউক্লিয়ার এমালশান টেকনোলোজি: https://www.nature.com/articles/159186a0 , https://arxiv.org/pdf/1604.04199.pdf
- মিডিয়া-তে এই আবিষ্কার নিয়ে আলোচনা: https://www.digitaltrends.com/cool-tech/great-pyramid-muon-tomography/
- পিরামিড-সংক্রান্ত নথিপত্র আবিষ্কারের কাহিনী এখানে দেওয়া রয়েছে: Tallet, P., Les papyrus de la Mer Rouge 1: Le “journal de Merer” (Institut Français d’Archéologie Orientale, 2017).