সালোকসংশ্লেষের গোড়ার কথা
যদি একদম শুরুতে পিছিয়ে যাই, ১৬০০ সালে জেন ভ্যান হেলমন্ট প্রথম ভাবনাচিন্তা করছিলেন গাছের বেড়ে ওঠার রসদ নিয়ে। তারপর ধীরে ধীরে প্রমাণ হল যে মোমবাতি জ্বালার পর যে গ্যাস তৈরি হয়, তাকে দূরীভূত করে গাছপালা (জোসেফ প্রিস্টলি, ১৭০০)। এই গ্যাস দূরীকরণ যে আসলে পাতার সবুজ অংশ আর আলোর কারসাজি, সেটাও প্রমাণ হল (জেন ইনজেনহাউস)। আঠেরশর গোড়ার দিক অবধি নানান বিজ্ঞানী প্রমাণ করেন যে গাছ কার্বন ডাই-অক্সাইড আর জলকে জৈববস্তু রূপে সংরক্ষণ করে।
তারপর আস্তে আস্তে এই ধারণাটা এল যে সৌরশক্তি গাছের মাধ্যমে রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে পুঞ্জীভূত হতে থাকে (রবার্ট ভন মেয়ার, ১৮৪৫)। এইখানে জন্ম নিল থার্মডায়নামিক্সের প্রথম সূত্রও। শক্তির অবিনশ্বরতা সূত্র। তোমরা বড় হলে আরো জানবে এর সম্পর্কে। এরপর ক্লোরোফিলের ভূমিকা বিশ্লেষণ করা হলো এবং এর জন্য সালোকসংশ্লেষের প্রথম নোবেল-ও এল (রিচার্ড উইলস্ট্যাটার, ১৯১৫)। পরের নোবেলটি এসেছিল হিম আর ক্লোরোফিলের গঠনের সন্ধান দিয়ে (হান্স ফিশার)।
সালোকসংশ্লেষ আসলে কি, তার খোলস আস্তে আস্তে ছাড়ানো হল। বোঝা গেল যে এটি আসলে একটি জারণ-বিজারণ নির্ভর পদ্ধতি এবং এতে অক্সিজেন উৎপন্ন হয় জলের আলোকবিয়োজনের মাধ্যমে (Photolysis) (কর্নেলিস ভ্যান নেইল)। এ-ও দেখা গেল যে আলোকবিয়োজন এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড নিবন্ধন (carbon-di-oxide fixation) দুটি পৃথক পদ্ধতি (রবার্ট হিল)। এই কার্বন ডাই-অক্সাইড নিবন্ধন বিক্রিয়াটি বিশ্লেষণ করে আরেকটি নোবেল এলো (মেলভিন কেলভিন)। আলোকনির্ভর ATP উৎপাদন (photophosphorylation) এবং ক্লোরোফিলের জারণ আবিষ্কৃত হয় উনিশ শতকের মধ্যভাগেই। ব্যাকটেরিয়ার সালোকসংশ্লেষের কথাও জানা যায় ১৯৮৪ সালে 1,2,3।
সালোকসংশ্লেষ বিক্রিয়া:এক নজরে
যে প্রক্রিয়া এত সর্বজনগ্রাহ্য এবং এতগুলো দিন ধরে এতজন মান্যবর তার গবেষণায় নিযুক্ত ছিলেন, এক নজরে দেখে নেওয়া যাক সেটি আদতে কোন রাসায়নিক বিক্রিয়া (চিত্র ১)।
কার্বন ডাই-অক্সাইড+জল+সূর্যালোক = কার্বহাইড্রেট+অক্সিজেন
এই সালোকসংশ্লেষের বিস্তারিত বিবরণ আজকের আলোচনার বিষয় নয়। মোদ্দা কথা হল, মূলত দুটি ভাগে ঘটে এই প্রক্রিয়া। উদ্ভিদ কোষে খাদ্য প্রস্তুতকারী অংশ ক্লোরোপ্লাস্ট। প্রথম ধাপটি ক্লোরোপ্লাস্ট-এর থায়লাকয়েড মেমব্রেন অঞ্চলে সম্পন্ন হয় এবং এতে আলোকনির্ভর বিক্রিয়াগুলি ঘটে [১]। বিক্রিয়াগুলি (জারণ) ঘটে সূর্যালোকের শোষণ, জলের অণু ভেঙ্গে অক্সিজেন ও হাইড্রজেন তৈরি হওয়া (ফটোলাইসিস) এবং ATP ও NADPH নামক শক্তিসঞ্চয়ী যৌগ উৎপাদনের মাধ্যমে [১]। ক্লোরোপ্লাস্টের স্ট্রোমা অঞ্চলে অন্ধকার বিক্রিয়াগুলির (বিজারণ) সময় এই যৌগগুলি পরিবেশ থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে আবদ্ধ করে এবং বিক্রিয়াশেষে শর্করা উৎপন্ন করে (কেলভিন সাইকেল) [১]। ইলেক্ট্রনের আদান-প্রদান এবং নানা উৎসেচকের মাধ্যমে এই দুই ধাপের বিক্রিয়াগুলি সম্পাদিত হয়ে থাকে।
সালোকসংশ্লেষ: দূষণমুক্ত পরিবেশের পাহারাদার
এই অবদি জানা গেল গাছের এলাহী খাবারদাবার আর তাদের রেসিপির কথা। আজকের এই দূষণ-দস্যুর অত্যাচারে জর্জরিত যুগে পরিবেশে কার্বনের পরিমিত উপস্থিতি যেখানে একমাত্র মুক্তির পথ, কৃত্রিম সালোকসংশ্লেষ হতে পারে একটি অন্যতম উপকারী বায়োমিমেটিক পদ্ধতি। সোজা কথায় প্রকৃতিকে অনুকরণ করে তৈরি একটি পরিবেশ-বান্ধব বৈজ্ঞানিক উপায়। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন কার্বনের নিবদ্ধীকরণ সম্ভব, অন্যদিকে তেমনি সূর্যালোকের সরাসরি রূপান্তর করা যেতে পারে। পরিবেশ-অনুকূল বিকল্প শক্তির যোগান হিসেবে এই পদ্ধতির গুরুত্ব অপরিসীম। আমরা জানি রান্নায় জ্বালানী লাগে, কিন্তু যদি আবার সেই রান্না থেকেই তৈরিও হয় জ্বালানী! কি, কেমন মজার না? তবে দেখেই নেওয়া যাক এইবার, পাতার হেঁসেল ছেড়ে ল্যাবরেটরির ঘরে কেমন করে চলে রান্নাবান্না আর জ্বালানির উল্টোপুরাণ।
ফসিল ফুয়েলের (কার্বন নির্ভর জ্বালানী) পরিবর্তে সূর্যালোকের ব্যবহার যে মানবসভ্যতাকে সুরক্ষিত করবে ইতালীয় বিজ্ঞানী জিয়াকোম শিয়ামিশিয়ান ১৯১২ সালে সর্বপ্রথম এর ধারণা দিয়েছিলেন। সূর্যালোক ব্যবহার করে কার্বন ডাই অক্সাইডকে আবদ্ধ করা কিম্বা তাকে অন্য কোন উপকারী যৌগে পরিবর্তিত করার পদ্ধতি নিয়ে ঘোর আলোচনা শুরু হয় একুশ শতকের গোড়ায়।
কৃত্রিম সালোকসংশ্লেষের প্রথম ধাপ: সস্তার অনুঘটক
কৃত্রিম সালোকসংশ্লেষ কিভাবে করা যেতে পারে দীর্ঘদিন ধরেই সেটি বিজ্ঞানীদের আলোচ্য বিষয়। এই ক্ষেত্রে প্রথম ধাপ হল জলের আলোক বিয়োজন, যাতে দরকার এমনকিছু অনুঘটক যা সহজেই গবেষণাগারে জলকে ভেঙ্গে অক্সিজেন আর হাইড্রজেন তৈরি করবে। রুথেনিয়াম আর রেনিয়াম দিয়ে করা গেলেও সেসব বড্ড দামী ধাতু। ২০০৮ সালে প্রথম এক যুগান্তকারী আবিষ্কার আসে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের (তখন তিনি MIT-তে ছিলেন যদিও) অধ্যাপক ড্যানিয়েল নসেরার ( চিত্র ২) হাত ধরে 4,5। সস্তা কোবাল্ট আর পটাশিয়াম ফসফেট দিয়ে তিনি আর তাঁর ছাত্র ম্যাথিউ কানান বানালেন এমন এক অনুঘটক যা সহজেই সূর্যালোকের উপস্থিতিতে জলকে ভেঙ্গে অক্সিজেন আর প্রোটন উৎপন্ন করতে পারে। শুধু তাই নয়, এটিকে হাইড্রজেন উৎপাদনকারী প্ল্যাটিনাম অনুঘটকের সাথে যৌথভাবে ব্যবহার করা যায় এবং এটি বিক্রিয়াকালে ভঙ্গুর হলেও নিজেই নিজেকে পুনর্নির্মাণ করতে সক্ষম।
নসেরার পরীক্ষায় তিনি কি করলেন আসলে? একটি ইন্ডিয়াম টিন অক্সাইড ইলেক্ট্রোডকে কোবাল্ট ও পটাশিয়াম ফসফেট মিশ্রিত জলে নিমজ্জিত রাখা হল। ইলেক্ট্রোডে ভোল্টেজ দেওয়া হলে তার গায়ে কোবাল্ট, পটাশিয়াম আর ফসফেট জমা হয়ে অনুঘটক তৈরি হল। এটি এবার জলকে জারণ করে অক্সিজেন আর মুক্ত হাইড্রজেন আয়ন তৈরি করল। অন্য ইলেক্ট্রোডকে প্ল্যাটিনাম দিয়ে প্রলিপ্ত করলেন যা দিয়ে তৈরি হল হাইড্রজেন গ্যাস। কোবাল্টভিত্তিক অনুঘটকটি প্রক্রিয়া চলাকালীন ভেঙ্গে গেলেও দ্রবণে মিশ্রিত কোবাল্ট আর পটাশিয়াম থেকে আবার পুনর্নির্মিত হয়ে যায়। যদিও এই সম্পূর্ণ বিক্রিয়ার কৌশল (Reaction Mechanism) তখনও জানতে পারেননি বিজ্ঞানী নসেরা।
এই আবিষ্কারের তিনটি প্রধান সীমাবদ্ধতা ছিল। এক, সস্তা ধাতুর তৈরি এমন কোন অনুঘটকের খোঁজ যা দিয়ে হাইড্রজেন আর অক্সিজেন একসাথেই তৈরি হতে পারে। দুই, নসেরার অনুঘটক যেমন বিদ্যুত দিয়ে চলছে, তার পরিবর্তে সূর্যালোকে যাতে চলতে পারে সেটির অনুসন্ধান। এমন কোন পদার্থ খুঁজতে হবে যা সরাসরি সূর্যালোক শোষণ করে জলকে বিয়োজিত করার জন্য ইলেকট্রন তৈরি করতে পারবে, ঠিক যেমন গাছের পাতায় হয়। তিন, সম্পূর্ণ তড়িত-রাসায়নিক বিক্রিয়াটির কৌশল উদঘাটন। খোঁজ চলল এমনকিছুর যাতে এইসব বাধা যেমন দূরীভূত হবে, তেমনি স্থিতিশীল হবে আর কম খরচে বানানো যাবে। স্থিতিশীলতা এই আবিষ্কারের অন্যতম দিক কারণ গাছের পাতা যেমন দীর্ঘদিন ধরে সালোকসংশ্লেষ-সক্ষম থাকে, একবার প্রক্রিয়াটি চলার পরেই নষ্ট হয়ে যায়না, ঠিক তেমনি কিছু দরকার ছিল বিজ্ঞানীদেরও। আর বিকল্প শক্তির উৎস হিসেবে এর ব্যবহার যেন সকলের নাগালে থাকে এটাই যেহেতু লক্ষ্য, তাই এর উৎপাদনের খরচ খুব বেশি হলে চলবে না।
উপরের প্রশ্নগুলোর অনেকটা সমাধান নিজেই করে দিলেন নসেরা। ২০১১ সাল নাগাদ আসে তাঁর দ্বিতীয় অভিনব আবিষ্কার, কৃত্রিম পাতা (artificial leaf)। একটি তাসের সাইজের সৌরকোষ দিয়ে প্রাকৃতিক সালোকসংশ্লেষের দশগুণ বেশি হারে জলের আলোক বিয়োজন সম্ভব (চিত্র ৩)। এটি তৈরি হয়েছে সস্তা, সহজলভ্য এবং স্থিতিশীল পদার্থ দিয়ে। নসেরার আবিষ্কারের ওপর ভিত্তি করে একটি স্টার্ট-আপ কোম্পানিও গড়ে ওঠে যার নাম সান ক্যাটালিটিক্স। এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে ভারতে টাটাদের সাথেও চুক্তি হয় নসেরার। উদ্দেশ্য এইরকম: যেসব দূরবর্তী এলাকায় বিদ্যুত আজও পৌঁছয়নি, একটি “personalized energy”-র (নিজস্ব শক্তিভান্ডার, যেমন পাওয়ার ব্যাঙ্ক থাকে মোবাইল চার্জ করার জন্য) উৎস থাকলে তারাও হয়ত আর অন্ধকারে থাকবেনা। প্রতিটি বাড়ি হয়ে উঠবে এক একটি ছোটখাটো পাওয়ার স্টেশন।
হেঁশেলের ভিত: কৃত্রিম পাতা
এইখানে বলে নেওয়া যাক জ্বালানী আর রান্নার দিকটা। গাছের পাতা যেমন সূর্যের আলো দিয়ে জলকে ভেঙ্গে তৈরি অক্সিজেন ছেড়ে দেয় বাতাসে, আর হাইড্রজেন আর কার্বন ডাই-অক্সাইড শুষে নিয়ে বানায় গাছের খাবার (গ্লূুকোজ), নসেরার পাতাটিও 6,7 সেই পথেই হাঁটতে সক্ষম। তবে সেটি দিয়ে যে হাইড্রজেন উৎপন্ন হবে, সেটি কার্বন ডাই-অক্সাইডের সাথে বিক্রিয়া করবে, কিন্তু গাছের মত নিজেদের খাবার তৈরি না করে শক্তির যোগানে ব্যবহৃত হবে। অতএব কৃত্রিম পাতার রান্নাঘরটি সূর্যালোক দিয়ে জ্বালানী তৈরিতে সক্ষম হল। জলকে বিয়োজিত করে যে হাইড্রজেন আর অক্সিজেন উৎপাদিত হবে তাকে জ্বালানীকোষে সঞ্চিত রেখে শক্তির উৎস এবং পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকারক কার্বন-নিবদ্ধীকরণ প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা যাবে। সিলিকন দিয়ে তৈরি সৌরকোষটি জলে নিমজ্জিত করে সূর্যালোকে রাখলে এতটাই বিদ্যুত উৎপন্ন হবে যাতে একটি বাড়ির সারাদিনের বিদ্যুত চাহিদা পূরণ হয়, এমনটাই দাবী রাখেন নসেরা।
এইবার দেখা যাক এটি কিভাবে কাজ করে (চিত্র ৩)। কোষের একদিকে সিলিকনের উপর কোবাল্ট অনুঘটকের পাতলা প্রলেপ দেওয়া থাকবে যাতে প্রক্রিয়া চলাকালীন সিলিকন জারিত না হয়ে যায়। অক্সিজেন উৎপাদনের কারখানা এটি। কোষের অন্যপাশে সিলিকনের উপরে নিকেল-মলিবডেনাম-জিঙ্ক সংকর ধাতুর অনুঘটকের উপস্থিতিতে জল থেকে হাইড্রজেন তৈরি হবে। উল্লেখ্য যে জন টার্নারও একবার চেষ্টা করেছিলেন এই কৃত্রিম পাতা বানানোর জন্য, কিন্তু তিনি ব্যবহার করেছিলেন ভঙ্গুর এবং অত্যন্ত দামী আর দুষ্প্রাপ্য ধাতু যা ব্যবহারিক জীবনে গ্রহণযোগ্য নয়। জলকে বিয়োজিত করে যে হাইড্রজেন আর অক্সিজেন উৎপাদিত হবে তাকে জ্বালানীকোষে সঞ্চিত রেখে বিদ্যুত তৈরি হবে।
নসেরার এই অনুঘটকটি পরীক্ষাকালীন ৪৫ ঘন্টা স্থায়ী হয়েছে। সরাসরি সূর্যালোকের ব্যবহার এবং অক্সিজেন ও হাইড্রজেন একইসাথে উৎপাদনও সম্ভব হয়েছে। যদিও সম্পূর্ণ বিক্রিয়ার কৌশল জানার আগেই মূল প্রতিবন্ধকতা ছিল মাত্রাতিরিক্ত খরচ এবং দৈনিক জীবনে এর ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা। আপাতভাবে যেসব জ্বালানী বাজারে আছে, তাদের টেক্কা দিতে গেলে এই কৃত্রিম পাতাটিকে আরো অনেক বেশি সস্তা, স্থিতিশীল এবং কর্মক্ষম হতে হবে।
বায়োনিক লিফ: মড্যুলার কিচেন
কৃত্রিম সালোকসংশ্লেষের নসেরার সাম্প্রতিকতম আবিষ্কারটি খুবই আকর্ষনীয় 8,9,10। এতটাই আধুনিক যে চেনাজানা রান্নাঘরের নকশা বদলে এক্কেবারে ঝাঁ চকচকে রূপে হাজির। তাই যেখানে প্রাকৃতিক সালোকসংশ্লেষে মাত্র ১% সূর্যালোককে ব্যবহার করা যায়, সেখানে ১/১০ ভাগ সূর্যালোকের শক্তিকে ব্যবহার করে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিবদ্ধীকরণ ও জ্বালানী উৎপাদন সম্ভব হয়েছে তাঁর ল্যাবরেটরিতে। ২০১৫ সালে নসেরা প্রথম নিকেল, মলিবডেনাম আর জিঙ্ক অনুঘটকের মাধ্যমে জলের বিয়োজনে অক্সিজেন এবং হাইড্রজেন উৎপন্ন করেন। সেই হাইড্রজেন আর কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে খাওয়ানো হয় একটি বিশেষভাবে জৈব প্রকৌশলে তৈরি Ralstonia eutropha ব্যাকটেরিয়াকে [৯]। এই ব্যাকটেরিয়াই এই দুই গ্যাসকে মিশ্রিত করে কোষ বিভাজনকালে তরল জ্বালানী (যেমন অ্যালকোহল) তৈরিতে সক্ষম। পরে অবশ্য সেই অনুঘটকটি ব্যাকটেরিয়ার পক্ষে ক্ষতিকারক প্রমাণ হওয়ার ফলে এখন নতুন অনুঘটক ব্যবহার করা হচ্ছে, যেটি কোবাল্ট আর ফসফরাস দিয়ে তৈরি [১০]।
তাহলে শেষ কথাটি এই যে জলকে বিয়োজন করে হাইড্রজেন আর অক্সিজেন উৎপন্ন করা এবং তাকে ব্যবহার করে জ্বালানী তৈরি কিম্বা কার্বনের স্থায়ীকরণ খুব বেশি দুরূহ নেই আর। এই নিয়ে নানান দেশে নানান গবেষণা চলছে অবিরাম। যেহেতু বিজ্ঞানী নসেরা কৃত্রিম সালোকসংশ্লেষের অঘোষিত সম্রাট তাই আজকের আলোচনায় তাঁকেই গুরুত্ব দেওয়া হল। যে গতিতে এগিয়ে চলেছে বিজ্ঞান, রসায়ন আর জীববিদ্যাকে সঙ্গে নিয়ে, অদূর ভবিষ্যতেই হয়ত প্রকৃতিকে সত্যি পেছনে ফেলে সূর্যশক্তিকে রুপান্তরের খেলায় আমরাই বিজয়ী হব একদিন।
তথ্যসংগ্রহ ও ঋণস্বীকার:
- Link: https://photosynthesiseducation.com/
- Link: https://www.nobelprize.org/nobel_prizes/chemistry/laureates/1988/illpres/highlights.html
- Link: https://photosynthesiseducation.com/discovery-of-photosynthesis/
- Link: https://en.wikipedia.org/wiki/Daniel_G._Nocera
- Link: https://science.sciencemag.org/content/321/5892/1072
- Link: https://www.youtube.com/watch?v=J556uXwrjII
- Link: https://science.sciencemag.org/content/334/6056/645
- Link: https://www.youtube.com/watch?time_continue=12&v=2KRlRhNbxKg
- Link: https://www.pnas.org/content/112/8/2337
- Link: https://science.sciencemag.org/content/352/6290/1210