একটা ডাচ হাসপাতাল কয়েকদিন আগে হঠাত খবরের শিরোনামে চলে এলো। রোগীকে বাঁচাতে এমন এক ধাপ নিল যেটা আগে ভাবা যায়নি। মাথার খুলিটাকেই আদ্যোপান্ত পাল্টে বসিয়ে দিল একটা প্লাস্টিকের খুলি। এটা না করলে রোগিনীকে বোধহয় বাঁচানো যেত না। তার মাথায় হাড়ের ঘনত্ব এতটাই বেড়ে গেছিল যে তার চাপ সোজা গিয়ে পড়ছিল মস্তিষ্কের উপর। দৃষ্টিশক্তি কমে আসছিল, চলাফেরাতেও প্রভাব পড়ছিল। তিন মাস হয়ে গেছে অপারেশনের পর। দিব্যি বহালতবিয়তে আছেন তিনি। সাহস করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাই খবরটা প্রকাশ করলেন।
এর আগে এরকম রোগে কি করা হতো ? স্বাভাবিক প্রশ্ন। মাথার খুলিটা সাময়িকভাবে সরিয়ে চাপ কমানো হতো । তা আবার বসিয়ে দেওয়া হত পরে। এক বিশেষ সিমেন্টে তৈরী খুলি বসানোর চেষ্টাও হয়েছে। তবে রোগীর আসল খুলির মত হুবুহু একই মাপের একটা কৃত্রিম খুলি বানানো সম্ভব হতো না। 3D স্ক্যানিং ও প্রিন্টিং-এর দৌলতে এই বাধাটাও অতিক্রম করা গেল।
3D স্ক্যানিং ও প্রিন্টিং প্রস্থেটিক্সের জগতে একটা নতুন বিপ্লব এনে দিয়েছে। দেহের বিভিন্ন অংশকে নকল করার কথা ভাবা হচ্ছে। নাক, চোখ, চামড়া অব্দি। এই প্রযুক্তির বিশেষত্ব হলো: মাপের গোলমাল হওয়ার অবকাশ নেই। কারণ এই পদ্ধতিতে কোনো বস্তু থেকে বিয়োগ করে নয়, একের পর এক দ্বিমাত্রিক স্তর যোগ করে তৈরী হয় যাবতীয় জিনিস। তাই যেখানে যতটা মালমশলা চাই নিখুঁতভাবে মেপে 3D প্রিন্টিং-এর দ্বারা ততটাই ঢালা হয়।
এই নিখুঁত প্রযুক্তির সাহায্যেই এক দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত রোগিনীকে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন ফেরত দেওয়া গেল। বলা হচ্ছে, প্লাস্টিকের খুলিটি ছাড়া অপারেশন বা ব্যাধির চিহ্নমাত্র নেই। মস্তিষ্কের রোজকার কাজকর্ম আবার স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরে এসেছে।
ছবি: দা ইন্ডিপেন্ডেন্ট